পর্ব -৭--মোহাম্মদ ও ইসলাম,
কেন যীশু নিয়ে এত স্ববিরোধীতার ছড়াছড়ি কোরানে ? মোহাম্মদ
নিজেকে মুসা ও ঈসা নবীর ধারাবাহিকতায় শেষ নবী দাবী করছেন। তার ফলে
তাঁকে তৌরাত ও ইঞ্জিল কিতাব থেকে কিছু কিছু বক্তব্য প্রদাণ করতে হয়।তিনি দীর্ঘদিন
ধরে ইহুদি ও খৃষ্টানদের কাছ থেকে বাইবেলের কাহিনি গুলো শুনেছেন কিন্তু নিজে পড়তে না
পারার কারনে কাহিনীগুলের নিহিতার্থ ঠিক মতো অনুধাবণ করতে পারেন নি।যেমন তিনি
বুঝতে পারেন নি যীশুর ঈশ্বর বা মানুষের পূত্র পরিচয়ের মাহাত্ম, যীশুর ক্রুশ
বিদ্ধ হয়ে আত্মত্যাগের মাহাত্ম এসব। ফলে যখন
তিনি তাঁর কোরানে বাইবেলের কাহিনী গুলো মাঝে মাঝে বলেছেন তখন তিনি অত্যন্ত স্থূল ভাবে
ও অর্থে তা বর্ণনা করেছেন, এছাড়াও
তিনি যা বলেছেন তার মধ্যে ধারাবাহিকতা ও যুক্তির অভাব ছিল।অথচ ততদিনে
সেসব কথামালা কোরানের বানী রূপে সংরক্ষন ও মুখস্থ করা হয়ে গেছে, পাল্টানোর
উপায় ছিল না।পরবর্তীতে যখন তাঁর শিক্ষিত
সাহাবীরা বিষয়টি সঠিকভাবে অনুধাবণ করতে পারে, তখন তারা বুঝতে পারল, বাইবেল
সঠিক হলে কোরান অবশ্যই ভূয়া হবে।আর তখন
থেকেই তারা সবাই মিলে তারস্বরে প্রচার করা শুরু করল- বাইবেল বিকৃত, বাইবেল
বিকৃত। আর সেটাই হয়েছে বর্তমানে কোরান
যে বিশুদ্ধ ও সঠিক তা প্রমানের মাপকাঠি। তাহলে কি
বলা যায় না যে একটা প্রকান্ড মিথ্যা প্রচারণার ওপর ভিত্তি করে কোরান ও ইসলাম দাড়িয়ে
আছে?
মোহাম্মদের কাজ কর্ম দেখলে পরিস্কার বোঝা
যায় তার কথা ও কাজে সামঞ্জস্য ছিল খুবই কম। তিনি উপদেশ দিতেন এক রকম কিন্তু নিজে সেটা অনুসরণ করতেন না। এ বিষয়ে লোকজনে কানা-ঘুষা শুরু করলে তিনি সাথে-সাথেই আল্লাহর কাছ থেকে তাৎক্ষনিকভাবে ওহি নামিয়ে
নিতেন, অনেকটা ইন্টারনেট থেকে প্রয়োজনীয় সফটওয়ার
ডাউনলোড করার মত। যার অর্থ হলো- স্বয়ং আল্লাহই বলছে মোহাম্মদকে
সেসব কাজ করতে, তা সে কাজ যতই অসামাজিক ও অনৈতিক হোক না কেন। এই একবিংশ শতাব্দীতেও কোন মুমিন বান্দাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তারা ঠিক এ উত্তরটি
প্রদান করে থাকে।কতকগুলি উল্লেখযোগ্য উদারহণ দেয়া যেতে পারে এ বিষয়ে। যেমন-
আর যদি তোমরা ভয় কর যে, এতীম মেয়েদের হক যথাথভাবে
পুরণ করতে পারবে না, তবে সেসব মেয়েদের মধ্যে থেকে যাদের ভাল লাগে
তাদের বিয়ে করে নাও দুই, তিন, কিংবা চারটি পর্যন্ত। আর যদি এরূপ আশঙ্কা
কর যে, তাদের মধ্যে ন্যায় সঙ্গত আচরণ বজায় রাখতে
পারবে না, তবে, একটিই অথবা তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসীদেরকে; এতেই পক্ষপাতিত্বে জড়িত না হওয়ার অধিকতর সম্ভাবনা। (কোরান ৪:৩)
উক্ত আয়াত দ্বারা মোহাম্মদ মুমিন বান্দাদেরকে
৪টা পর্যন্ত বিয়ে করার জন্য সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। উক্ত আয়াত পড়লে মনে হতে পারে যে- আল্লাহ বোধ হয় এতিম মেয়েদের জন্য বড়ই দয়াময়
ও তাদের জন্য বড়ই চিন্তাশীল। আর সে দয়ার নিদর্শন
হিসাবে আল্লাহ বলছেন যে, এতিম মেয়েদের প্রতি
সুবিচার করতে না পারলে তাদের যাকে ইচ্ছা তাকে বিয়ে করা যাবে, তবে তার সীমা চারটা পর্যন্ত। এভাবে এতিম মেয়েদেরকে বিয়ে করলে তাদের একটা গতি হবে ও তারা একটা আশ্রয় পাবে। বলাবাহুল্য, এ আয়াত দ্বারা এটাও খুব স্পষ্ট যে- এতিম
মেয়েদের কোন ইচ্ছা-অনিচ্ছা নেই, তাদের নিজেদের কোন
মতামত নেই।
তারা অনেকটা গৃহপালিত পশুপাখীর মত, ইচ্ছা হলেই যে-কেউ যে-কোন এতিম মেয়েকে বিয়ে করতে পারবে, আর বয়স সেখানে কোন বিষয় নয়। যেমন একজন ৭০ বছরের বুড়াও ৯ বছরের একটা শিশুকে বিয়ে করতে পারবে, কেউ এতে বাধা প্রদাণ করতে পারবে না। খোদ মোহাম্মদই ৫১ বছর বয়েসে ৬ বছরের আয়শাকে বিয়ে করে তার একটা মহান নিদর্শণ
সৃষ্টি করেছেন ইতোমধ্যেই। এখনও সৌদি আরবে ধণী
আরবরা বৃদ্ধ বয়েসে হর হামেশা ৯/১০/১১ বছরের মেয়ে বিয়ে করছে ও তাদের সাথে সেক্স করছে
বিবেকের কোন তাড়না ছাড়াই। কারন তাদের বিবেক সেই
১৪০০ বছর আগেই দ্বীনের নবী মোহাম্মদ স্তব্ধ করে দিয়ে গেছেন।
বাহ্যত: মোহাম্মদের এতিম মেয়েদের প্রতি এ
দয়া অনেক মুমিন বান্দাদের মনে তুমুল আড়োলন তোলে। আহা দ্বীনের নবী! সীমাহীন দয়ার সাগর! কিন্তু আসলে বিষয়টি কি? কেন মেয়েগুলো এতিম হলো? মোহাম্মদের ডাকে উগ্র ও অজ্ঞ আরবরা বেহেস্তে গিয়ে হুর পরীর সাথে ফুর্তি করার উদগ্র
কামনায় তারা বিভিন্ন গোত্র ও জাতির বিরুদ্ধে আগ বাড়িয়ে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে অনেকটা
অপঘাতে (শহীদ?) নির্মমভাবে নিহত হয়েছে। অর্থাৎ তাদের মৃত্যুর
জন্য মোহাম্মদই দায়ী। মোহাম্মদের আদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে যেয়ে তারা
মারা গেছে।
কি সেই আদর্শের উদ্দেশ্য? উদ্দেশ্য- তারা যদি যুদ্ধে মারা যায়- তাহলে সরাসরি বেহেস্তে গিয়ে ৭২ টা যৌনাবেদনময়ী
হুরদের সাথে অফুরন্ত ফুর্তি করার সুযোগ পাবে।আর যারা বেঁচে থাকবে তারা ফুর্তি করবে তাদের রেখে যাওয়া কন্যা, স্ত্রী, বোন এদের সাথে বহু
বিবাহের মাধ্যমে। আহা, ফুর্তির কি অবাধ ব্যবস্থা! মরলেও ফূর্তি, বাঁচলেও ফুর্তি। এরপরও যদি কেউ ইসলাম গ্রহণ না করে,
সে নিতান্তই মূর্খ। ফুর্তির এরকম অবাধ
ব্যবস্থা অন্য কোন ধর্মে না থাকাতেই মনে হয় আমাদের মুমিন বান্দাদের ধর্মীয় বিশ্বাস
এত শক্ত ও দৃঢ়। কিন্তু এর পরেও মুমিন মুসলমানের জন্য সীমা
হলো চারটি মাত্র। ইচ্ছে থাকলেও চারের বেশী বিয়ে করা যাবে না। কিন্তু খোদ মোহাম্মদের জন্য কি নিদান?
মোহাম্মদের জন্য নিদান হলো তিনি যত খুশী বিয়ে
করতে পারবেন, যাকে ইচ্ছা তাকে বিয়ে করতে পারবেন,
যে কেউ তাকে বিয়ে করতে চাইলেই সাথে সাথেই তিনি তাকে বিয়ে করতে
পারবেন। আর খোদ আল্লাহই তাকে সে অনুমোদন দিচ্ছেন।
হে নবী! আপনার জন্য আপনার স্ত্রীগণকে হালাল করেছি, যাদেরকে আপনি মোহরানা প্রদান করেন। আর দাসীদেরকে হালাল
করেছি, যাদেরকে আল্লাহ আপনার করায়ত্ব করে দেন এবং
বিবাহের জন্য বৈধ করেছি আপনার চাচাতো ভগ্নি, ফুফাতো ভগ্নি, মামাতো ভগ্নি, খালাতো ভগ্নিকে যারা আপনার সাথে হিজরত করেছে। কোন মুমিন নারী যদি নিজেকে নবীর কাছে সমর্পন করে, নবী তাকে বিবাহ করতে চাইলে সেও হালাল। এটা বিশেষ করে আপনারই
জন্য-অন্য মুমিনদের জন্য নয়। আপনার অসুবিধা দূরীকরণের
উদ্দেশে। মুমিনগণের স্ত্রী ও দাসীদের ব্যাপারে যা নির্ধারিত করেছি আমার
জানা আছে। আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু। কোরান, 33:50
এখানে কিন্তু মোহাম্মদ কয়জনকে বিয়ে করতে
পারবে সে বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। মোহাম্মদ যে যত খুশী
তত বিয়ে করতে পারবেন তা কিন্তু এর পরেই খুব পরিষ্কার ভাষায় বলা হচ্ছে- কোন মুমিন
নারী যদি নিজেকে নবীর কাছে সমর্পন করে, নবী তাকে বিবাহ
করতে চাইলে সেও হালাল। এটা বিশেষ করে আপনারই জন্য-অন্য মুমিনদের
জন্য নয়। আপনার অসুবিধা দূরীকরণের উদ্দেশে।- অর্থাৎ যে কোন নারী
যদি মোহাম্মদকে বিয়ে করতে চায় মোহাম্মদের ইচ্ছা হলেই তাকে বিয়ে করতে পারবেন,
এভাবে যতখুশী ইচ্ছা বিয়ে করতে পারবেন তিনি। এ বিশেষ সুবিধা শুধুমাত্র মোহাম্মদেরই জন্য অন্য কারো জন্য নয়।কেন এ সুবিধা? সেটাও বলা হয়েছে কোন রকম রাখ ঢাক না করেই।সেটা হলো মোহাম্মদের অসুবিধা দুর করার জন্য।কি ধরণের অসুবিধায় পড়লে একজন মানুষ যত ইচ্ছা খুশী বিয়ে করতে চাইতে পারে?
একমাত্র বহুগামী কোন পুরুষ যদি যখন তখন যার তার সাথে যৌন সংগম
করতে চায় বা যৌন সংগমে সব সময় বৈচিত্র উপভোগ করতে চায় কিন্তু সেটা সামাজিক বা অন্য
কারনে সম্ভব হয় না- এ ধরণের আচরণ কেউ করলে লোকজন তাকে লম্পট বা বদমাইশ এসব বলে গালি
দিতে পারে।সুতরাং বলাই বাহুল্য এটা একটা বিরাট অসুবিধা। মোহাম্মদও মনে হয় এ ধরণের একটা মহা সমস্যায় পড়ে গেছিলেন।দ্বীনের নবী মোহাম্মদ যখন তখন নিত্য নতুন নারীর সাহচর্য কামনা করতেন কিন্তু তার
সামাজিক মর্যাদার কারনে তা সম্ভব ছিল না।সেটা করলে লোকে নানা
রকম সমালোচনা করতে পারে এমন কি তিনি নবী কিনা সেটা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে পারে। মোহাম্মদের এ অসুবিধা দেখে অসীম দয়ালু আল্লাহ আর স্থির থাকতে পারে নি সাথে সাথে
উক্ত আয়াত নাজিল করে মোহাম্মদকে উদ্ধার করে, তার অসুবিধা দুর করে। সম্ভবত একারনেই আল্লাহকে
এত অসীম দয়ালু বলা হয়।
তবে শুধুমাত্র নারীঘটিত ব্যাক্তিগত সমস্যা
দূর করার জন্য কেন আল্লাহ মোহাম্মদের প্রতি আয়াত নাজিল করল এটা নিয়ে কথা বললে মুমিন
বান্দারা দারুন কিছু যুক্তি তুলে ধরে। বলে- তখন অনেক সাহাবী
যুদ্ধে মারা যাচ্ছিল আর তাদের স্ত্রীরা বিধবা আর কন্যারা এতিম হচ্ছিল, এভাবে অনেক নারী অসহায় হয়ে পড়ছিল, এমতাবস্থায় মোহাম্মদ তাদের অনেককেই বিয়ে করে বরং মর্যাদাপূর্ণ জীবন উপহার দিচ্ছিলেন। এছাড়াও বিজিত গোষ্ঠীর পুরুষদের নির্বিচারে হত্যা করার ফলে তাদেরও বহু নারী বিধবা
হচ্ছিল, মোহাম্মদ অত্যন্ত দয়াপরবশ হয়ে তাদের কাউকে
কাউকে বিয়ে করে তাদেরকে সম্মানিত করেন।তাহলে বোঝা গেল- মোহাম্মদ
সত্যি খুব মহান কাজ করছিলেন। তার মানে তিনি যে মাত্র
১৩ টি বিয়ে করেছিলেন সেটাও অনেক কম হয়ে গেছিল। কারন তার কথায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বেহেস্তের লোভে অন্য জনপদ আক্রমন করে যুদ্ধ করতে
গিয়ে অনেক মানুষই তাদের জীবন হারিয়েছিল, হারিয়েছিল
বিজিত গোষ্ঠির বহু মানুষ, ফলে অনেক নারী হয়েছিল
বিধবা, কন্যা হয়েছিল এতিম। সে তুলনায় মোহাম্মদের ১৩ টা বিয়ে নিতান্তই কম। ভাগ্য ভাল, মোহাম্মদ আরবের সবগুলো বিধবা নারী বা এতিম
কন্যাদেরকে বিয়ে করেন নি। তবে, মোহাম্মদ তৎকালীন অন্যতম ধণী ব্যাক্তি তার বিশ্বস্থ সহচর আবু বকরের ৬ বছরের
কন্যা আয়শাকে কি কারনে বিয়ে করলেন, আয়শা তো কোন
অসহায় শিশু ছিল না , ছিল না কোন এতিম বা বিধবা। এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে খুবই কৌতুকপূর্ণ উত্তর দেয় মুমিন বান্দারা। কেউ কেউ বলে- আবু বকর নিজে চেয়েছিল নবীর সাথে পারিবারিক সম্পর্ক স্থাপন করতে,
আর তাই সে নিজেই উদ্যোগী হয়ে এ বিয়ে দেয়। কেউ কেউ বলে- এটা ছিল আল্লাহর ইচ্ছা।
যদি জিজ্ঞাসা করা হয়- ৫১ বছরের প্রৌঢ় মোহাম্মদ
কেন ৬ বছরের শিশুকে বিয়ে করতে গেল কেন? তারা বলে- এ
ধরণের শিশু বিয়ে সেই আরব দেশে প্রচলিত ছিল, তাই মোহাম্মদ কোন খারাপ কাজ করেনি।হুম এতোক্ষনে বোঝা
গেল আসল রহস্য। বিপদে পড়লে বা অথবা যুক্তি খুজে না পেলে
বিশ্বাসী মানুষ কতটা বিভ্রান্তিকর ও অযৌক্তিক কথা বলতে পারে এগুলো তার উত্তম উদাহরণ। অথচ হাদিস থেকে জানা যায়- আবু বকর মোটেই আয়শাকে মোহাম্মদের সাথে বিয়ে দিতে রাজী
ছিল না।হাদিস থেকে আরও জানা যায়- আয়শার এক জিজ্ঞাসাবাদে মোহাম্মদ
জানান তিনি তাকে স্বপ্নে দেখেছিলেন যে আয়শা তার স্ত্রী। আর সেই যুগে আরব দেশে শিশু বিয়ে প্রচলিত ছিল বলে দুনিয়ার সকল যুগের সেরা তথাকথিত
আদর্শ মানব মোহাম্মদ সেই একই কর্মকান্ড করবেন- এটা একমাত্র প্রচন্ড কুসংস্কারাচ্ছন্ন
মানুষরা ছাড়া আর কেউ মেনে নেবে না। এ সম্পর্কিত হাদিস
দেখা যাক-
উরসা থেকে বর্নিত- নবী আবু বকরকে তার মেয়ে আয়েশাকে বিয়ে করার ইচ্ছের কথা
জানালেন। আবু বকর বললেন- আমি তোমার ভাই , এটা কিভাবে সম্ভব? নবী উত্তর দিলেন- আল্লার
ধর্ম ও কিতাব মোতাবেক আমি তোমার ভাই, রক্ত সম্পর্কিত
ভাই না, তাই আয়শাকে আমি বিয়ে করতে পারি। (সহী বুখারী, ভলুম-৭, বই- ৬২, হাদিস নং-১৮)
উক্ত হাদিস থেকে বোঝা যায়, আবু বকর মোটেই এ বিয়েতে রাজী ছিল না।এমন কি মোহাম্মদ যে এরকম একটা অদ্ভুত প্রস্তাব দিয়ে বসতে পারে সেটাও ছিল তার চিন্তার
বাইরে।সেটা তার বক্তব্য থেকে পরিষ্কার বোঝা যায়, সে বলছে, এটা কিভাবে সম্ভব?
বলা বাহুল্য, আবু বকর নিশ্চয়ই
আরও যুক্তি তর্কের অবতারণা করেছিল যাতে তার একমাত্র কন্যাকে মোহাম্মদের মত প্রৌঢ় একজন
মানুষের সাথে বিয়ে দিতে না হয়।কোন পিতাই সেটা চায়
না।কিন্তু সেসব কথা উক্ত হাদিসে আসে নি।
আয়েশা হতে বর্নিত- আল্লাহর নবী বললেন, তোমাকে বিয়ে করার আগে আমি স্বপ্নে তোমাকে দুই বার দেখেছি।এক ফিরিস্তা সিল্কে মোড়ানো একটা বস্তু এনে আমাকে বলল- এটা খুলুন ও গ্রহন করুন
, এটা আপনার জন্য। আমি মনে মনে বললাম-
যদি এটা আল্লাহর ইচ্ছা হয় এটা অবশ্যই ঘটবে। তখন আমি সিল্কের আবরন
উন্মোচন করলাম ও তোমাকে তার ভিতর দেখলাম। আমি আবার বললাম যদি
এটা আল্লাহর ইচ্ছা হয় তাহলে এটা অবশ্যই ঘটবে। (সহী বুখারী, ভলুম-০৯, বই- ৮৭, হাদিস-১৪০)
উক্ত হাদিস থেকে বোঝা যায়- কিভাবে মোহাম্মদ
তার এ হেন শিশু বিয়েকে একটা বানান স্বপ্নের দ্বারা বৈধ দেখানোর চেষ্টা করছেন। এসব কর্মকান্ডে মোহাম্মদের স্ববিরোধীতা কোথায়? মোহাম্মদ বলছেন- ইসলামের আগে আরবের মানুষ অন্ধকার যুগে বাস করত আর কন্যা শিশু জীবন্ত
হত্যা করত ও শিশু কন্যাদেরকে বিয়ে দিত। মোহাম্মদ ইসলামের নামে
মানুষদেরকে অন্ধকার থেকে বের হয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছে। অথচ সেই মোহাম্মদ নিজেই স্বয়ং শিশু বিয়ে করেছেন, এর মাধ্যমে তিনি কি আদর্শ সেই আরব দেশের মানুষের সামনে তুলে ধরলেন? তিনি কিভাবে মানুষকে অন্ধকার থেকে বের হয়ে আসার কথা বলছেন সেটা
মোটেই পরিস্কার নয়। যাহোক, মোহাম্মদ বিয়ে করার সাথে সাথেই ৬ বছরের শিশুকে নিয়ে বিছানায় যান নি। অন্তত: এটুকু মহানুভবতা তাঁর মধ্যে দেখা যাচ্ছে। কখন তিনি আয়শাকে বিছানায় নিয়ে যান? যখন মোহাম্মদের
বয়স ৫৪ আর আয়শার বয়স ৯। যা জানা যায় নিচের
হাদিস থেকে-
আয়েশা হতে বর্নিত- মহানবী তাকে ছয় বছর বয়েসে বিয়ে করেন, নয় বছর বছর বযেসে তাদের বিবাহিত জীবন শুরু হয়। হিসাম জানিয়েছিল- আমি জেনেছি আয়েশা মহানবীর মূত্যুর আগ পর্যন্ত নয় বছর যাবত
বিবাহিত জীবন অতিবাহিত করেছিলেন। (সহী বুখারী,
ভলুম-৭, বই -৬২, হাদিস নং- ৬৫)
আরও অনেক হাদিস আছে এ সম্পর্কে। ৫৪ বছরের এক প্রায় বৃদ্ধ যিনি নাকি আবার আল্লাহর নবী, দুনিয়ার সকল মানুষের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ট আদর্শ মানুষ তিনি ৯ বছরের এক শিশু কন্যাকে
বিছানায় নিচ্ছেন তাকে স্ত্রী হিসাবে এবং অত:পর এ দৃশ্যকল্পটা একটু কল্পনা করা যাক।মানসিক ভাবে সুস্থ কোন ৫৪ বছরের প্রৌঢ় কি পারবে এভাবে একটা নাবালিকা ৯ বছরের শিশুকে
নিয়ে বিছানায় যেতে? অথচ অবলীলায় এ কাজটাই করেছিলেন আমাদের তথাকথিত
সর্বশ্রেষ্ট মানব নবী মোহাম্মদ।দুনিয়ার তথাকথিত সর্ব
শ্রেষ্ট মানব আল্লাহর নবী মোহাম্মদ ৫৪ বছর বয়েসে তার নাতনীর বয়সী ৯ বছরের নাবালিকা
আয়শাকে নিয়ে বিছানায় যাচ্ছেন- এ দৃশ্যটা যদি কোন মানসিকভাবে সুস্থ মানুষ ভাবে তার
কি প্রতিক্রিয়া হওয়ার কথা? অথচ মুমিন বান্দার
নির্বিকার, তাদের বোধ বুদ্ধি সব ভোতা হয়ে গেছে,
এ দৃশ্যকল্পেও তাদের কোন প্রতিক্রিয়া হয় না- তারা ভাবে –
এটা আল্লাহরই কুদরত, তারই ঈশারা।মাশআল্লাহ! একাজটি করতে কোন বাধাও দিতে পারেনি আয়শার বাপ আবু
বকর। এ থেকে বোঝা যায় কতটা হিপনোটিক করে ফেলেছিলেন মোহাম্মদ আবু
বকরকে। আবু বকরের বোধ বুদ্ধি সব লোপ পেয়ে গেছিল।যে কারনে সে তার নাবালিকা মেয়েটিকে প্রৌঢ় মোহাম্মদের বিছানায় পাঠিয়ে দেয় নিশ্চিন্ত
মনে। আজকের দিনে কোন মানসিকভাবে সুস্থ পিতা কি পারবে তার নাবালিকা
কন্যাকে এভাবে একজন প্রৌঢ়ের সাথে বিয়ে দিয়ে তার বিছানায় পাঠাতে? যদি কেউ পারে , সে হয় মানসিকভাবে
অসুস্থ না হয় পাষন্ড।
ঠিক একারনেই আজও আরব দেশে বিশেষ করে সৌদি
আরবে হর হামেশা ৬০/৭০ বছর বয়েসের বৃদ্ধরা টাকার জোরে ৯/১০/১১/১২ বছর বয়েসের নাবালিকাদেরকে
বিয়ে করে বিছানায় নিয়ে যায়, কোন রকম বিবেকের তাড়না
ছাড়াই।তাদেরকে জিজ্ঞেস করলে তারা অকপটে স্বীকার করে- তাদের নবী যখন
এ কাজটা করেছিলেন তখন তাদের এ কাজটা করতে তো কোন বাধা দেখা যায় না।কথাটা সত্য। কারন নবীর সুন্নাহ তথা তার আদর্শ,
কাজ কর্ম, আচার আচরণ শতভাগ পালন
করে যাওয়াই হলো একজন আদর্শ মুমিন মুসলমানের কাজ। আরব দেশের মানুষরা সেটাই নিষ্ঠার সাথে পালন করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। আল্লাহ তাদেরকে বেহেস্তে নসীব করুক।
মোহাম্মদ যদি হুবহু এ কাজটা আরব দেশ ছাড়া
অন্য কোথাও এমন কি আমাদের এই বাংলাদেশে এখন এই একবিংশ শতাব্দীতে করতেন তাহলে কি ঘটতো
তার কপালে? নির্ঘাত তাকে জেলে যেতে হতো নাবালিকা ধর্ষণের
অভিযোগে, তার বহু বছরের সাজা হয়ে যেত। এ ছাড়া সাজা পাওয়ার আগে পুলিশের গুতা খেয়ে তার বাপের নাম ভুলিয়ে দেয়া হতো।কেন এ তুলনাটা দেয়া হলো? কারন তার আদর্শ সকল
যুগের জন্যই কার্যকর ও অবশ্য পালনীয় কেয়ামতের আগ পর্যন্ত।তাহলে দেখা যাচ্ছে মোহাম্মদ এখন এসে তার এ বাল্য বিবাহের কর্মটি করলে তার বিশ্বাসী
উম্মতের হাতেই কঠিন গণধোলাই খেতেন ও জেলের ঘানি টানতেন।তার অর্থ তার এ আদর্শ আজকের যুগে অচল। এ ক্ষেত্রে চালাক মুমিন
বান্দারা বলে থাকে- নবী তো কাউকে শিশু বা নাবালিকা বিয়ে করতে বলে যান নি।তা ঠিক বলে যান নি, কিন্তু নিষেধও করে
যান নি। বরং উল্টো তিনি নিজ জীবনে সেটা পালন করে দেখিয়ে গেছেন কি করতে
হবে আর তিনি যা পালন করে গেছেন তা সকল মুমিন বান্দাদেরকে পালন করা একান্ত আবশ্যক সেই
কেয়ামতের আগ পর্যন্ত।তবে কিছু কিছু বিষয়ে নবী যা করে গেছেন বা আল্লাহ তাকে যেসব
সুযোগ সুবিধা দিয়ে গেছেন তা তার উম্মতদের জন্য প্রযোজ্য ছিল না আর সে বিষয়গুলো তিনি
নিজেই চিহ্ণিত করে গেছেন। যেমন বিয়ের সংখ্যা
নির্ধারণের বিষয়। যেখানে মোহাম্মদের জন্য যত খুশি বিয়ে করার
লাইসেন্স আল্লাহ দিয়ে গেছে, সেখানে তার উম্মতরা
মাত্র চারটি পর্যন্ত করতে পারবে। কিন্তু বিয়ের বয়স
নির্ধারণের ব্যপারে আল্লাহ কোন নির্দেশনা দেয় নি। মনে হয় আল্লাহ এ বিষয়ে কোন বিধাণ দিতে ভুলে গেছিল। বিয়ের ক্ষেত্রে বয়স যে একটা সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আল্লাহ সেটা বেমালুম
ভুলে গেছে।এ ক্ষেত্রে পুরুষ বা নারী যেই হোক, বয়স একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, শারিরীক বা মানসিক
পরিপক্কতার জন্য।
একটা তরতাজা জোয়ান বা প্রৌঢ় লোক একটা শিশু
বা নাবালিকা বিয়ে করে তার উপর উপগত হলে উক্ত শিশু বা নাবালিকাটি যে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত
হতে পারে বা শারিরীক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে- এ বিষয়ে আল্লাহ বা মোহাম্মদ কোন
গুরুত্ব দিয়েছেন বলে দেখা যায় না। আর এ থেকেই নারীদের
প্রতি আল্লাহ বা মোহাম্মদের দৃষ্টি ভঙ্গী দারুন ভাবে প্রকাশ পায়। নারীকে যদি একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসাবে বিবেচনা করা হতো, তাহলে কিন্তু এ ধরণের দৃষ্টিভঙ্গি তৈরী হতো না। আর তখন নারীর বিয়ের ক্ষেত্রে তার বয়সটাকে বিবেচনা করা হতো ও এ বিষয়ে একটা বিধান
আল্লাহ তার কোরানে দিত।যেখানে অনেক ফালতু ও অনৈতিক বিষয়ে( যেমন- মোহাম্মদ কার সাথে
সেক্স করবে, কাকে বিয়ে করবে, বন্দী নারীদের সাথে মুসলমানরা সেক্স করবে কি না এসব) আল্লাহ যখন তখন জিব্রাইল পাঠিয়ে
মোহাম্মদের কাছে বানী পাঠাচ্ছে সেখানে গোটা মানব জাতির জন্য এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ
বিষয়ে কোন আয়াত পাঠাবেন না, এটা কোন ভাবেই মেনে
নেয়া যায় না। নারীদের প্রতি মোহাম্মদের এ দৃষ্টি ভঙ্গি
প্রকাশ করে তিনি নারীদেরকে শুধুমাত্র ভোগ্য পন্য ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারতেন না।কিন্তু পূণ্যবতী মুমিনা নারীরা এসব জেনে কি সন্তুষ্ট হবেন? অনেক পূণ্যবতী মুমিনা আছে যারা এসব কথা শুনতেও চায় না,
শুনলেও বিশ্বাস করে না- এমনই কঠিন তাদের ঈমান। কিন্তু যে বিষয়ের প্রতি তাদের এমন কঠিন কঠোর ঈমান সেই বিষয়টাকে একটু ভাল করে
জেনে নেয়াটা কি জরুরী নয়?
তবে যখন তখন মোহাম্মদ বিয়ে করা শুরু করার
ফলে তার সাহাবী ও অমুসলিমদের মধ্যে একটা গুজব ওঠে যে মোহাম্মদ একজন নারী লিপ্সু কামুক
ব্যক্তি। তখনই মোহাম্মদ চিন্তা করে বিষয়টা গুরুতর আর এ ধরণের গুজবকে
বাড়তে দেয়া সমিচীণ হবে না। যেই ভাবা সেই কাজ। জিব্রাইল তৎক্ষনাৎ মোহাম্মদ সকাশে হাজির।
এরপর আপনার জন্যে কোন নারী হালাল নয় এবং তাদের পরিবর্তে অন্য স্ত্রী গ্রহণ
করাও হালাল নয় যদিও তাদের রূপলাবণ্য আপনাকে মুগ্ধ করে, তবে দাসীর ব্যাপার ভিন্ন। আল্লাহ সর্ব বিষয়ের
উপর সজাগ নজর রাখেন। (কোরান, ৩৩:৫২)
আল্লাহ অত:পর মোহাম্মদকে আর কোন বিয়ে করতে
নিষেধ করে দিল। মোহাম্মদ প্রমান করার চেষ্টা করলেন তিনি যা
কিছু করেন সবই আল্লাহর হুকুমে করেন। এ হুকুম মোতাবেক যেহেতু
আল্লাহ এখন তাকে বিয়ে করতে নিষেধ করে দিল, তাই অত:পর তিনি আর কোন বিয়ে শাদি করবেন না তা সে যতই রূপবতী নারীর দেখা তিনি পান
না কেন। আহা, কি মহানুভবতার কথা!
তবে আল্লাহর নিষেধবানী আসার আগেই তার ১৩ টা বিয়ে সম্পন্ন হয়ে গেছে। তার বয়সও প্রায় ষাট হয়ে গেছে।এসময়ে একসাথে ৯/১০
টি স্ত্রী তার হারেমে, তাদেরকেই সামাল দিতে
তাকে হিম সিম খেতে হয়। এমতাবস্থায় বিধর্মীরা তাকে নারীলোলুপ বা
কামুক বলে অপবাদ না দিলেও তার বিয়ের বাতিক বাদ দেয়া ছাড়া গতি ছিল না।সেকারনেই অবধারিত ভাবে আল্লাহর ওহী নাজিল।এক সাথে হেরেম তৈরী করে স্ত্রীদেরকে পুষে রাখলে তাতে নানা রকম গন্ডগোল সৃষ্টি হয়,
সবাইয়ের মন যুগিয়ে চলতে হয়। কিন্তু দাসীদের সাথে অবাধ মেলামেশায় এ ধরণের সমস্যা এড়ানো যায়।সেকারনে দেখা যাচ্ছে উক্ত আয়াতে বলা হচ্ছে- তাদের পরিবর্তে অন্য স্ত্রী গ্রহণ
করাও হালাল নয় যদিও তাদের রূপলাবণ্য আপনাকে মুগ্ধ করে, তবে দাসীর ব্যাপার ভিন্ন – অর্থাৎ বিয়ে করতে না পারলেও
দাসীদের সাথে মেলামেশা তথা তাদেরকে বিছানায় নিয়ে যাওয়াতে কোন বাধা নেই। আহা, আল্লাহর কি অপরিসীম দয়া আমাদের দ্বীনের নবীর
ওপর। নবীর নারী প্রীতির ব্যপারটার প্রতি তার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ছিল,
সে নবীর বৈচিত্রময় যৌন চাহিদার ব্যপারে উদার ছিল। আর তাই সাথে সাথে নিদানও দিয়ে দিল- তবে দাসীর ব্যাপার ভিন্ন- অর্থাৎ আল্লাহ বলল,
হে মোহাম্মদ, তোমাকে আর বিয়ে
করতে নিষেধ করছি কারন লোকজন তোমার বিয়ের বাতিক নিয়ে কানা ঘুষা করছে, তুমি দু:খ করো না, আমি তোমার বৈচিত্রময়
যৌন রূচির কথা জানি, তাই দাসীদের সাথে যত খুশী ফুর্তি করার অনুমতি
তোমাকে দেয়া হলো। আহা আল্লাহ কতই করুনাময়! শুধু তাই নয় আল্লাহর
সীমাহীন করুণার আরও নিদর্শন দেখা যায় নীচের আয়াতে-
আপনি তাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা দূরে রাখতে পারেন এবং যাকে ইচ্ছা কাছে রাখতে পারেন। আপনি যাকে দূরে রেখেছেন, তাকে কামনা করলে তাতে
আপনার কোন দোষ নেই। এতে অধিক সম্ভাবনা আছে যে, তাদের চক্ষু শীতল থাকবে; তারা দুঃখ পাবে না এবং আপনি যা দেন, তাতে তারা সকলেই
সন্তুষ্ট থাকবে। তোমাদের অন্তরে যা আছে, আল্লাহ জানেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ,
সহনশীল। কোরান, ৩৩: ৫১
উক্ত আয়াতে যাকে বলতে কাকে বুঝানো হচ্ছে?
উক্ত যাকে বলতে বুঝাচ্ছে দাসীদেরকে। একবার মোহাম্মদ তার স্ত্রী হাফসার ঘরে তার অনুপস্থিতিতে মারিয়া নামের এক দাসীর
সাথে মিলিত হয়েছিলেন। তাদের মধুর মিলন শেষ না হতেই হাফসা ঘরে ফিরে
আসে, সে আল্লাহর নবী শ্রেষ্ট মানব তার মহান স্বামী প্রবরকে দেখতে
পায় মারিয়ার সাথে তার সাধের বিছানায়। এসেই তার স্বামী শ্রেষ্ট
মানব মোহাম্মদকে দাসীর সাথে এক বিছানায় দেখে তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে।কিন্তু যা আল্লাহর দৃষ্টিতে একটা ধৃষ্টতা হিসেবে মনে হয়। আর সাথে সাথেই উক্ত আয়াত নাজিল হয়ে যায়। আল্লাহ সাফ সাফ জানিয়ে দেয় যে তার নবী কোন নারীর সাথে কখন কোথায় বিছানায় যাবে
না যাবে এটা নিয়ে এমন কি তাঁর কোন স্ত্রীও প্রশ্ন তুলতে পারবে না। তিনি যখন যার সাথে মন চায় বিছানায় চলে যাবেন তা সে যার বিছানাই হোক না কেন। বরং এ ধরণের পরিস্থিতিতে নবীর স্ত্রীদের উচিত তাদের বিছানা নবীর জন্য ছেড়ে দেয়া। কারন দ্বীনের নবী, দুনিয়ার শ্রেষ্ট মানব
তাকে তো আর আল্লাহ কষ্ট দিতে পারে না। তার বৈচিত্রময় যৌন
জীবনের মজা থেকে তাকে নিবৃত্তও করতে পারে না। এমনই করুনা ঝরে পড়ে নবীর প্রতি আল্লাহর। এখানে মোহাম্মদের স্ববিরোধীতাটা কোথায়? সেটা হলো ৪:৩ আয়াত মোতাবেক আল্লাহ বলছে- যদি সমভাব বজায় রাখতে না পার তাহলে একটি
মাত্র বিয়ে করতে। বলা বাহুল্য, ইসলাম যে মাত্র একটা বিয়ে করতে উৎসাহিত করে এটা বোঝাতে মুসলিম পন্ডিতরা ব্যপকভাবে উক্ত আয়াতটি
ব্যবহার করে থাকে। খোদ জাকির নায়েককেও দেখা গেছে খুব গর্বিত
ভঙ্গিতে সেটা ব্যখ্যা করতে। কিন্তু খোদ আল্লাহর
নবীর জন্য সেটা পালন করার কোন দায় নেই। তার জন্য সব রকম বিধি
নিষেধ রদ।
এমন ভাবেই সেটা রদ করা হয়েছে যে মোহাম্মদ
যা খুশী তাই করবেন কিন্তু বলার কিছু নেই।যখন তখন বিয়ে করবে,
দাসী-বাদির সাথে সেক্স করবে তার স্ত্রীদের ঘরেই – অথচ কিছুই বলা যাবে না, বললেই আল্লাহর তরফ থেকে ওহী চলে আসবে, সাথে সাথে হুশিয়ার
করে দেয়া হবে মোহাম্মদের ইচ্ছার বাইরে কেউ কিছু করলেই তাকে যেতে হবে আগুনের দোজখে। কি আজব কারবার! এ বিষয়ে ইসলামী পন্ডিতদের সাথে আলোচনা করলে তারা খুবই অদ্ভুত কিছু
যুক্তি তুলে ধরে। সেটা হলো- একটা দেশের একজন প্রেসিডেন্ট থাকে
যে দেশের সর্বেসর্বা। প্রেসিডেন্টের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় বিধি বিধানের
অনেক শিথিলতা থাকে। তা না হলে তার পক্ষে দেশ চালানো সম্ভব নয়। যুক্তি হিসাবে খারাপ না এটা আসলে। আমি আসলেই জানি না,
প্রেসিডেন্টের ক্ষেত্রে সত্যিকার কোন আইনি শিথিলতা থাকে কি না। যতটা জানি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে প্রেসিডেন্টকেও দেশের প্রচলিত বিধিবিধান সব মেনে
চলতে হয়, তিনিও আইনের উর্ধ্বে নন। সে কারনেই দেখা যায়, বিভিন্ন গণতান্ত্রিক
দেশে প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে অনেক সময় তাদের নানা অপকর্মের জন্য জেল জরিমানা করা হয়,
সবচাইতে বড় উদাহরণ হলো- বাংলাদেশের এরশাদ। স্বৈরতান্ত্রিক কোন দেশের প্রেসিডেন্টকে এ ধরণের কোন আইন কানুনের ধার ধারতে হয়
না। যেমন ইরাকের সাদ্দাম, লিবিয়ার গাদ্দাফি বা সৌদি আরবের বাদশাকে কোন আইন কানুনের ধার ধারতে হয় নি বা
হয় না, তারা যা বলে সেটাই আইন।
সুতরাং মোহাম্মদের কেইসটা বাস্তব সম্মত হবে
যদি কোন দেশে গণতান্ত্রিক ধারা না থাকে, যেখানে প্রেসিডেন্টকে
কোন জবাব দিহি করতে হয় না। আদিম কালের একজন গোষ্ঠি
প্রধানের জন্যেও ব্যপারটা বেশ মানানসই। এর অর্থ- মোহাম্মদ
ছিলেন একজন স্বৈরতন্ত্রী বা একনায়ক এবং তার আদর্শ হলো স্বৈরতন্ত্র বা একনায়কত্ব। এ যদি হয় প্রকৃত বিষয় তাহলে আধুনিক যুগের গণতান্ত্রিক দুনিয়ায় একনায়ক মোহাম্মদের
আদর্শ কিভাবে চলতে পারে? একনায়কতান্ত্রিক ব্যবস্থা
শ্রেষ্ট ব্যবস্থা হয় কিভাবে? একই সাথে যখন তখন দ্বীনের
নবী যে কোন দাসীর সাথে বিছানায় চলে যাচ্ছেন তার স্ত্রীদের সামনেই, এটা কিভাবে তার স্ত্রীদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা হলো
সেটাও বোঝা দু:সাধ্য। যুক্তির খাতিরে ধরা যাক, মোহাম্মদ তার দাসি মারিয়াকে নিয়ে তার স্ত্রী হাফসার বিছানায়
যান নি। তাহলেও উক্ত আয়াত কিন্তু বলছে- মোহাম্মদ যখন যাকে খুশি নিয়ে
বিছানায় যাবে আর তাকে কিছু বলা যাবে না।বিষয়টা কি একজন নবীর
পক্ষে মানান সই? আর সে নবীকে যদি বলা হয় দুনিয়ার সকল যুগের
সেরা চরিত্রবান ও আদর্শ মানব- তাহলে এটা কি একটা মহা কৌতুক নয়?
ইসলামে ব্যাভিচার ও ধর্ষন সম্পর্কিত দারুন
অদ্ভুত নিয়ম দেখা যায়। ইসলামে ব্যাভিচার ও
ধর্ষন এর সংজ্ঞা আমাদের প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার সংজ্ঞার মত নয়। কোরানে দেখা যাচ্ছে ব্যভিচারে শাস্তি হচ্ছে দোররা মারা, যেমন-
ব্যভিচারিণী নারী ব্যভিচারী পুরুষ; তাদের প্রত্যেককে
একশ’ করে বেত্রাঘাত কর। আল্লাহর বিধান কার্যকর
কারণে তাদের প্রতি যেন তোমাদের মনে দয়ার উদ্রেক না হয়, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাক। মুসলমানদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে। (কোরান, ২৪:২)
যেই ব্যভিচারী তাকে একশ বেত্রাঘাত বা দোররা
মারতে হবে।
দোররা মারার পর যদি অপরাধী ব্যাক্তি মারা যায়, তাতে কোন সমস্যা নেই। অবশ্য মোহাম্মদের কাছে
এ ধরণের ব্যভিচারের শাস্তি হিসাবে পাথর মেরে হত্যা করার ওহি এসেছিল আল্লাহর কাছ থেকে
যাকে রজম বলা হয়, আর তা পরবর্তীতে কোরানে সংকলণ করা হয়নি যা
পূর্ববর্তী অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে। ব্যভিচার বলতে বোঝায়
যদি দুটি নর নারী বিবাহ বহির্ভূত যৌন সঙ্গম করে। ধর্ষণ হচ্ছে- যদি কোন পুরুষ জোরপূর্বক কোন নারীর সাথে যৌন সঙ্গম করে।কিন্তু দেখা যাচ্ছে – খোদ আল্লাহর নবী নিজেই
বিয়ে বহির্ভূত যৌন সঙ্গম করতেন, এ ছাড়া জোর করে নারীর
সাথে যৌনক্রীড়া করতেন। পূর্বে যেমন বলা হয়েছে- মোহাম্মদ মারিয়া
নাম্নী দাসীর সাথে বিবাহ বহির্ভৃত যৌন সঙ্গম করতে গিয়ে তার স্ত্রী হাফসার কাছে ধরা
পড়েন ও পরবর্তীতে যখন খুশী যে কোন দাসীর সাথে যৌন সঙ্গম করার আয়াত আমদানী করেন।তিনি খায়বার আক্রমন করে সেখানকার সকল ইহুদি পুরুষদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করেন,
অত:পর তাদের নারীগুলোকে গণিমতের মাল হিসাবে তার সাথীদের মাঝে
বিলিয়ে দেন, তার ভাগে পড়ে ইহুদি গোষ্ঠি নেতার স্ত্রী
সাফিয়া। যেদিন মোহাম্মদের দল সাফিয়ার পিতা, স্বামী, ভাই এদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করে,
ঠিক সেদিনই মোহাম্মদ সাফিয়াকে নিয়ে নিজের তাবুতে রাত কাটান। কিভাবে মোহাম্মদ আল্লাহর বানীর মাধ্যমে বিয়ে বহির্ভূত যৌন সংসর্গকে অনুমোদন দিচ্ছেন
তার কিছু নমুনা দেখা যাক-
যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংযত রাখে। তবে তাদের স্ত্রী ও
মালিকানাভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে সংযত না রাখলে তারা তিরস্কৃত হবে না। (কোরান ২৩:৫-৬)
এরপর আপনার জন্যে কোন নারী হালাল নয় এবং তাদের পরিবর্তে অন্য স্ত্রী গ্রহণ
করাও হালাল নয় যদিও তাদের রূপলাবণ্য আপনাকে মুগ্ধ করে, তবে দাসীর ব্যাপার ভিন্ন। আল্লাহ সর্ব বিষয়ের
উপর সজাগ নজর রাখেন। (কোরান, ৩৩:৫২)
নারীদের মধ্যে তাদের ছাড়া সকল সধবা স্ত্রীলোক তোমাদের জন্যে নিষিদ্ধ;
তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাদের মালিক হয়ে যায়-এটা তোমাদের জন্য
আল্লাহর হুকুম। এদেরকে ছাড়া তোমাদের জন্যে সব নারী হালাল
করা হয়েছে, শর্ত এই যে, তোমরা তাদেরকে স্বীয় অর্থের বিনিময়ে তলব করবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য-ব্যভিচারের
জন্য নয়। অনন্তর তাদের মধ্যে যাকে তোমরা ভোগ করবে, তাকে তার নির্ধারিত হক দান কর। তোমাদের কোন গোনাহ হবে না যদি নির্ধারণের পর তোমরা পরস্পরে সম্মত হও। নিশ্চয় আল্লাহ সুবিজ্ঞ, রহস্যবিদ। কোরান ৪:২৪)
উক্ত ৪:২৪ আয়াত কেন নাজিল হয়েছিল সে সম্পর্কে
কিছু হাদিস দেখা যাক-
আবু সাদ খুদরি বর্ণিত- আল্লাহর নবী হুনায়নের যুদ্ধে একদল সৈন্য পাঠালেন। তারা সেখানে যুদ্ধ করল ও জয়ী হলো, আর বহু সংখ্যক
নারী তাদের হাতে বন্দিনী হলো। আল্লার নবীর কিছু লোক
তাদের স্বামী ,যারা ছিল পৌত্তলিক ,বর্তমান থাকাতে তাদের সাথে যৌন সংসর্গ করতে দ্বিধা করছিল। আর সাথে সাথেই কোরানের ৪:২৪ নং আয়াত নাজিল হলো- বন্দীনি নারীরা ছাড়া বাকী সব
বিবাহিতা নারী তোমাদের জন্য হারাম করা হলো। (সুনান আবু দাউদ,
হাদিস-২১৫০)
আবু সাদ খুদরি বর্ণিত- আল্লাহর রসুল হুনায়নের যুদ্ধে একদল সৈন্য পাঠাইলেন,
তারা যুদ্ধে জয়ী হলো এবং বহু সংখ্যক নারী বন্দী হলো। নবীর সৈন্যরা উক্ত নারীদের সাথে যৌন সংসর্গ করতে অনীহা বোধ করছিল কারন তাদের স্বামীরা
ছিল পৌত্তলিক। আর সাথে সাথেই উক্ত ০৪:২৪ আয়াত নাজিল হয়ে
গেল। (সহী মুসলিম ৮:৩৪৩২)
উপরোক্ত আয়াতগুলো পরিষ্কার ভাবে বলছে যে
দাসীদের সাথে যৌন সংসর্গ আল্লাহ কর্তৃক অনুমোদিত। উক্ত হাদিস দুটো থেকে আরও একটা বিষয় বেশ পরিষ্কার। সেই আরবের লোকগুলো তখনও অতটা অসভ্য ছিল না যে তারা বন্দিনী নারীদেরকে তাদের স্বামী
বর্তমান থাকতেই তাদের ওপর যৌন নির্যাতন করবে, কিন্ত মোহাম্মদ ও তার আল্লাহ এ ক্ষেত্রে নির্দয় ও নির্মম, তারা কোন মায়া দয়া বা সৌজন্যতা দেখাতে নারাজ। দুজন হাদিস বর্ণনাকারীর বর্ণনার মধ্যেও বেশ চাতুরি লক্ষ্যনীয়। আবু দাউদ সরাসরি বলছে- আল্লার নবীর কিছু লোক তাদের স্বামী ,যারা ছিল পৌত্তলিক ,বর্তমান থাকাতে
তাদের সাথে যৌন সংসর্গ করতে দ্বিধা করছিল। অর্থাৎ এখানে মূল বিষয়টা
ছিল বন্দিনী নারীদের স্বামী তখনও বেঁচে ছিল, এমতাবস্থায় লোকজন তাদের সাথে যৌন ক্রিয়া করতে দ্বিধা করছিল যা সেই আরবগুলোকে
বেশ মানবিক বোধ সম্পন্ন মনে হচ্ছে। পক্ষান্তরে,
মুসলিম বর্ণনা করছে এভাবে- নবীর সৈন্যরা উক্ত নারীদের সাথে যৌন
সংসর্গ করতে অনীহা বোধ করছিল কারন তাদের স্বামীরা ছিল পৌত্তলিক। বোঝাই যাচ্ছে নিবেদিত প্রাণ মুসলিম মিয়া তার নবীকে কোন রকম খারাপ রূপে দেখাতে
নারাজ আর তাই সে বলছে- তাদের স্বামীরা ছিল পৌত্তলিক আর বলা বাহুল্য এর কোন অর্থই হয়
না। যুদ্ধের সময় নারী বন্দী হলে তাদের স্বামী পৌত্তলিক নাকি অপৌত্তলিক
এটা অর্থহীন কথা।
তারা পৌত্তলিক ছিল এ অজুহাতেই তো মোহাম্মদ
তাদেরকে আক্রমন করেছিল। আসল বিষয়টা দাউদের বর্ণনায় আছে তা হলো-
এসব বন্দিনী নারীদের স্বামী বর্তমান থাকাতে মোহাম্মদের সাগরেদরা তাদের সাথে যৌন ক্রিড়া
করতে দ্বিধা করছিল।অর্থাৎ এখানে মোহাম্মদের সাগরেদদের দ্বিধার মূল কারন ছিল উক্ত বন্দিনী
নারীদের স্বামীদের কেউ কেউ তখনও জীবিত ছিল। যেমন উক্ত ৪:২৪ আয়াতে
বলা হচ্ছে- তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাদের মালিক হয়ে যায়। এক্ষেত্রে মুসলমানরা যে সব নারীদেরকে যুদ্ধ জয়ের মাধ্যমে অধিকার করবে তাদের স্বামী
জীবিত থাকলেও তারা মুসলমানদের গণিমতের মাল হিসাবে গণ্য হবে ও দাসীতে পরিণত হবে এবং
বলাবাহুল্য তাদেরকে ভোগ তথা ধর্ষণ করা যাবে, এমনকি তাদের বন্দী স্বামীর সামনেই। এটাই হলো আল্লাহর বিধাণ।দেখা যাচ্ছে মোহাম্মদের আল্লাহর কোন নীতিবোধ নেই, নেই কোন মানবতা। যে সব নারী বন্দিনী হতো, বলা বাহুল্য, মোহাম্মদ ও
তার সাগরেদরা যখন তাদের সাথে যৌন সংসর্গ করতে উদ্যত হতো, তারা নিশ্চয়ই খুব আনন্দের সাথে তা করত না।কারন তাদের স্বামী, পিতা বা ভাইদেরকে এসব
মুসলমানরা নির্মমভাবে হত্যা করেই তাদেরকে বন্দী করেছে। এমতাবস্থায়, তাদের সাথে যখন বিজয়ী মুসলমানরা যৌন সংসর্গ
করতে যেত নিশ্চয়ই তারা তাদের স্বজন হারানোর বেদনায় কঠিনভাবে মূহ্যমান থাকত। আর সে অবস্থাতেই মোহাম্মদ ও তার দল বল তাদের সাথে জোর করে যৌন সংসর্গ করত যাকে
আধুনিক পরিভাষায় বলা হয়- নির্মমভাবে ধর্ষণ করত। মোহাম্মদ ঠিক এ কাজটিই যদি বর্তমানে করতেন তাহলে তাকে ধর্ষণের অভিযোগে কঠোর শাস্তি
দেয়া হতো।
এমনকি তার দেশ সৌদি আরবে এহেন কর্মকান্ডের জন্য তাকে প্রকাশ্য
দিবালোকে শিরোচ্ছেদ করা হতো।
এসব নিয়ে ইসলামী পন্ডিতদের সাথে আলাপ করে
দেখা গেছে তারা খুব উদ্ভট কিসিমের ব্যখ্যা দেয়। যেমন তারা বলে- বর্তমানেও মার্কিন সেনাবাহিনী ইরাক বা আফগানিস্তানে দখলদারিত্বের
পর এরকম ভাবে নারী ধর্ষণ করেছে।তারা আরও বলে যে বিজয়ী
বাহিনী সব সময়ই বিজিত অঞ্চলের নারীদেরকে ধর্ষণ করে থাকে।তার মানে তারা বলতে চায় যে- সবাই যদি তা করে থাকে তাহলে মোহাম্মদ কি অন্যায়টা
করল? অর্থাৎ এ ধরণের নির্মম ধর্ষণ কোন অন্যায় নয়। খুবই যুক্তিসঙ্গত কথা। কিন্তু আসলে কি তাই
?মার্কিনীরা হয়ত ইরাক বা আফগানিস্তানে নারী ধর্ষণ করেছে,
কিন্তু আমেরিকা এ ধর্ষণকে আইনসঙ্গত না বলে তাকে অপরাধ হিসেবেই
দেখে বা যে কোন যুদ্ধে বিজয়ী বাহিনী কর্তৃক নারী ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবেই সবদেশে গণ্য
করা হয় বর্তমান বিশ্বে। এ ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে
সাক্ষ্য প্রমান জোগাড় অতিব জটিল বিষয় বলে সহজে অপরাধীকে সনাক্ত করে তার সাজা দেয়া
একটু কঠিন বটে কিন্তু যদি অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমান করা যায় আমেরিকা সহ সকল
সভ্য দেশই অপরাধীকে সাজা দেয়। কোন সভ্য দেশই এ ধরণের
ঘটনাকে আইন সঙ্গত বলে রায় দেয় না। একমাত্র ব্যতিক্রম
ইসলাম।
ইসলামের মোহাম্মদ ও তার আল্লাহ এহেন জঘন্য
ও বর্বর ধর্ষণকে শুধু আইন সঙ্গতই বলে না, পরন্তু এটা
চিরকালীন আদর্শ আইন বলে রায় দেয়। আর এখানেই সভ্য সমাজের
আইনের সাথে মোহাম্মদের তথাকথিত আল্লাহর আইনের তফাত। মোহাম্মদ নিজে স্বয়ং এটা নিষ্ঠার সাথে পালনও করে গেছেন আর সেটা সুন্না হিসাবে
তার অনুসারীদেরকেও পালন করতে বলে গেছেন, যেমন দেখা যায়
সাফিয়ার সাথে রাত্রি যাপনের ক্ষেত্রে। সাফিয়ার উদাহরণ তুলে
ধরলে অনেক মুসলিম পন্ডিত ব্যখ্যা করে যে- যখন সে তার স্বামী, পিতা, ভাই এদেরকে হারাল তখন
সে অসহায় হয়ে গেল এবং তার পক্ষে বেঁচে থাকা অসম্ভব ছিল। এমতাবস্থায় মোহাম্মদ তাকে বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে বরং সম্মানিত করল। দারুন ব্যখ্যা বলা বাহুল্য।
কিন্তু বিষয় হলো- মোহাম্মদ ও তার দল বল হঠাৎ করে একদিন খায়বার
আক্রমন করে সেখানকার সব পুরুষদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করল, অত:পর তাদের সকল নারীদেরকে তারা গণিমতের মাল হিসেবে ভাগাভাগি করে নিল, মোহাম্মদের ভাগে পড়ল সাফিয়া ও অত:পর নামকা ওয়াস্তে বিয়ে
করে যৌন দাসি হিসাবে ব্যবহার করতে লাগল, এটা কিভাবে
সেসব নারীদেরকে সম্মানিত করল? হাদিসে শুধুমাত্র মোহাম্মদের
বিয়ে করার কথা বলা আছে অন্যদের ব্যপারে কিছু নেই।কিন্তু মোহাম্মদ যে বিয়েই করেছিলেন সাফিয়াকে তার নিশ্চয়তা কি, যখন ইতোপূর্বেই আল্লাহ বন্দী নারীদেরকে দাসী হিসাবে সাব্যস্ত
করে তাদের সাথে বিয়ে বহির্ভূত যৌন সঙ্গম করতে অনুমোদন দিয়ে দিয়েছে? হাদিস তো নিবেদিত প্রান মুসলমানদেরই লেখা, তারা বুঝতে পেরেছিল সাফিয়াকে যদি মোহাম্মদের সাথে বিয়ে দেখান
না হয় সেটা একজন নবীর পক্ষে খুব দৃষ্টি কটু দেখায়, সুতরাং তারা মোহাম্মদের চরিত্র কলংকিত হোক এমন কিছু সজ্ঞানে লিখে যাওয়া তাদের
পক্ষে ছিল অসম্ভব। বরং তারা ভেবেছিল সব আত্মীয় স্বজনকে হত্যা
করার পর অসহায় সাফিয়াকে নবীর স্ত্রী হিসাবে দেখানোতে মোহাম্মদের মহত্ত্ব বহুগুনে
ফুটে উঠবে।
অন্যদিকে মারিয়াকে শুধুমাত্র দাসী হিসাবে
দেখার কারন হলো- কথিত আছে কোন এক মিশরীয় শাসক মোহাম্মদকে উক্ত দাসীকে উপহার পাঠায়। ইসলাম যেহেতু দাসীদের সাথে বিয়ে বহির্ভুত যৌন ক্রিড়া অনুমোদন করে, মারিয়া ছিল উপহার প্রাপ্ত দাসী তাই তাকে বিয়ে করার দরকার মনে
করেন নি মোহাম্মদ, তাকে মোহাম্মদের স্ত্রী হিসাবে দেখানোরও তাই
কোন তাগিদ ছিল না হাদিস লেখকদের। সাফিয়াকে তার স্বামীর
হত্যার পর দিনই বিয়ে করে মোহাম্মদ নিজেই ইসলামের পরিপন্থি কাজ করেছিলেন। ইসলামের বিধাণ হলো- যদি কোন নারী বিধবা বা তালাক প্রাপ্তা হয়, তাহলে তাকে পূনরায় বিয়ে করতে হলে কম পক্ষে ৩ মাস ১০ দিন অপেক্ষা
করতে হবে যাকে ইদ্দত কালীন সময় বলা হয়। কিন্তু মোহাম্মদ সাফিয়ার
ক্ষেত্রে সে বিধান অনুসরণ করেন নি। এভাবেই মোহাম্মদ প্রায়
প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজেই নিজের নিয়ম ভেঙ্গেছেন আর বর্তমানে তার উম্মতরা বলে- নবীর জন্য
আল্লাহর আলাদা বিধাণ। কিন্তু বিষয়টা হওয়া উচিত ছিল ভিন্ন। তা হলো- সাধারণ মানুষরা যে সমস্ত অনৈতিক কাজ কারবার করত, নবীর উচিত ছিল সেগুলোকে না করে মানুষের সামনে আদর্শ তুলে ধরা।প্রবাদ বাক্য বলে- আপনি আচরি ধর্ম পরেরে শিখায়। কিন্তু মোহাম্মদের ক্ষেত্রে এসবের কোন বালাই ছিল না।
মোহাম্মদের ক্ষেত্রে নিজে কোন আদর্শ তুলে
না ধরে যা ইচ্ছা তাই করতেন, পরে সেটাকে আল্লাহর
নির্দেশ বা ইচ্ছা বলে চালিয়ে নিজের দায় এড়াতেন, এর পর তার অনুসারীদেরকে ভিন্ন উপদেশ দিতেন।মোহাম্মদের গোটা জীবন ও কার্যঅবলী পর্যালোচনা করলে এরকমই স্ববিরোধী কর্মকান্ডের
বিপুল সমাহার দেখা যাবে।
দাসিদের সাথে বিয়ে বহির্ভুত যৌন সংসর্গ বিষয়ে
ইসলামী পন্তিতরা দারুন সব ব্যখ্যা প্রদান করে। যেমন- জাকির নায়েক বলে- দাসীদের সাথে যৌন সংসর্গ ইসলামের প্রথম আমলে দরকার ছিল। কারন তখন মুসলমানরা প্রায়ই যুদ্ধ বিগ্রহে লিপ্ত হতো, এর ফলে বহু মানুষ নিহত হতো, সেসব নিহতের স্ত্রী
কন্যাদেরকে মুসলমানরা দয়াপরবশ হয়ে আশ্রয় দিত। সুতরাং এটা ছিল এক মহৎ কাজ। কিন্তু জাকির নায়েক
ভুলে গেছিল যে এসব স্ত্রী কন্যাদেরকে মুসলমানরা যৌনদাসি হিসেবে ব্যবহার করত।তাছাড়া কি কারনে মুসলমানরা অন্য জনপদ আক্রমন করত ? প্রথমত: যদি তারা মোহাম্মদের ইসলামের দাওয়াত কবুল না করত, দ্বিতীয়ত: আরবের মুসলমানরা ছিল দরিদ্র , তাই ধণ সম্পদের লোভে তারা অন্যদের জনপদ আক্রমন করত। এ দুটো কারনই ছিল ইসলাম পরিপন্থি। কারন মোহাম্মদ প্রথম
দিকে প্রচার করেছিলেন- দ্বীন নিয়ে বাড়া বাড়ি নাই, যার ধর্ম তার কাছে।সুতরাং কাউকে ইসলামে দাওয়াত দিলে সেটা গ্রহণ না করলে তাকে আক্রমন
করে হত্যা করতে হবে এটা ছিল মোহাম্মদের প্রাথমিক ইসলামি দর্শনের পরিপন্থি।যারা ইসলামকে শান্তির ধর্ম বলে প্রচার করে বেড়ায় তাদেরকে এটা বোঝা উচিত।এর পর আসে ধণ সম্পদের লোভে আক্রমন।
ইসলামি বিধাণ অনুযায়ী- ইহকাল খুবই ক্ষনস্থায়ী,
আসল জগত হলো পরকাল। ধণ- সম্পদ মানুষকে
ইহকালে ব্যস্ত রাখে, যা পরকালের জন্য ক্ষতির কারন হয়।একারনে কোরান হাদিসে দারিদ্রকে বরণ করে নিতে বলা হয়েছে। ঠিক একারনেই মোহাম্মদের কথিত দীণ হীন জীবনকে খুব ফলাও করে প্রচার করা হয়।এখন সেই মোহাম্মদই আবার অন্যের সম্পদ লুন্ঠন করার জন্য তার বাহিনী পাঠাচ্ছেন। যেমন তিনি মদিণার পাশ দিয়ে চলে যাওয়া মক্কাবাসীদের বানিজ্য দলের ওপর আক্রমনের
জন্য দল পাঠাতেন, কখনো নিজেও তাতে অংশ নিতেন, উদ্দেশ্য তাদের সম্পদ লুন্ঠন করা।এটা ছিল তার ইসলামী দর্শনের পরিপন্থি কাজ। তাই সন্দেহ হওয়া স্বাভাবিক মোহাম্মদের আল্লাহ কোন ধরণের সৃষ্টি কর্তা যে তার নবীকে
বলে – ডাকাতি করে অন্যের ধণ সম্পদ লুঠ করতে বা অন্য
জনপদ আক্রমন করে তাদের ধণ সম্পদ লুঠ করা ও তাদের নারীদেরকে যৌন দাসি হিসাবে ব্যবহার
করার জন্য বন্দী করতে? বিষয়টার সাথে ধর্ম
না জড়ালে এর একটা সুন্দর ব্যখ্যা দেয়া যেতে পারে।
সেই তখনকার দিনে দুনিয়াতে জোর যার মুল্লুক
তার নীতি কার্যকর ছিল। শক্তিশালি সাম্রাজ্য সব সময় আশ পাশের দেশ
দখল করত ধণ সম্পদ লুন্ঠন বা সাম্রাজ্য বিস্তারের আশায়।এর সাথে ধর্মের কোন সংস্রব ছিল না। মোহাম্মদের কার্যকলাপকে
যদি সেভাবে বিশ্লেষণ করা হয় তাহলে তাতে দোষের কিছু দেখা যায় না। তার প্রতিষ্ঠিত আরব রাজ্য বিস্তারের জন্য তাঁকে যুদ্ধ করে সেসব অঞ্চল দখল করতে
হয়েছিল। কিন্তু যদি বলা হয়- সেটা ছিল ধর্মের কারনে তখনই সমস্যাটা সামনে
এসে দাড়ায়।কেন দাড়ায়? মোহাম্মদ বলছেন-
তাঁর প্রতিষ্ঠিত ধর্ম ও বিধি বিধাণ কেয়ামতের আগ পর্যন্ত চালু থাকবে যা আল্লাহর বিধাণ। তার মানে এই বর্তমান কালেও যদি মুসলমানরা শক্তিশালি হয়, তাহলে তারা অন্যের দেশ দখল করবে, তাদের ধণ সম্পদ লুট করবে, তাদের নারীদেরকে বন্দী
করে যৌন দাসী বানাতে পারবে।সুতরাং ইসলামী পন্ডিতদের
ব্যখ্যার গলদটা এখানে ধরা পড়ে যায়। তারা যে বলে সেই তৎকালে প্রয়োজনের তাগিদে
বা অনেকসময় বাধ্য হয়ে মুসলমানরা ঐসব কাজ করত।কিন্তু ইসলামী বিধাণ তা বলে না। ইসলামী বিধাণ বলে এসব
আচরণ কেয়ামতের আগ পর্যন্ত চালু থাকবে।আর এসব বিধি বিধাণের
কোন পরিবর্তন বা সংস্কারও করা যাবে না কারন এ বিধাণ হলো খোদ আল্লাহর।আর এখানেই আরব দেশের বাইরের মুসলমানরা একটা মৌলিক ভুল করে থাকে।যেমন বাংলাদেশের মুসলমানরা যেটা পালন করে তার মধ্যে সুফিবাদের প্রভাব আছে আর সেটা
মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন। এর মধ্যে মোহাম্মদের
প্রাথমিক যুগের মক্কার ইসলাম ধর্মের প্রভাব বেশী। এ সময়ে মোহাম্মদ শান্তির বানী প্রচার করেছেন। আর এরা এটাকেই আসল ইসলাম মনে করে।
তাবলিগীরা এ ধরণের ইসলাম প্রচার করে। তাদের এ ধরণের প্রচারে দেখা যায় বহু উচ্চ শিক্ষিত মানুষও তাদের দলে ভিড়ে যায়। কিন্তু মদিনায় যাওয়ার পর মোহাম্মদ যে ভিন্ন ধর্মী এক ইসলাম প্রচার শুরু করে দেন
যার মূল কথাই হলো- ধর, আক্রমন কর,
হত্যা কর, দখল কর, লুট কর, নারী বন্দি করে যৌন
দাসি বানাও, সমালোচনাকারীর কথা চিরতরে স্তব্ধ করে দাও-
এটা এরা বুঝতে পারে না। তারা বুঝতে পারে না, মদিণাতে ভিন্ন ধর্মী কোরানের আয়াত নাজিল করে মক্কায় প্রচারিত
ইসলামকে বাতিল করে দেয়া হয়েছে যা আবার কোরানেও কয়েকবার বলা হয়েছে। সুতরাং তাদের মাক্কি ইসলাম যে বাতিল হয়ে গেছে তা তারা অবগত নয়- আর একারনেই বাংলাদেশের
প্রতিটি মুসলমানের কাছে শোনা যায়- ইসলাম হলো শান্তির ধর্ম, কারন কোরানে বলা আছে- দ্বীন নিয়ে বাড়াবাড়ি নেই। সত্যিকার অর্থে প্রকৃত ইসলাম যা মোহাম্মদ পরিশেষে প্রতিষ্ঠিত করে যান আর তাঁর শেষ
ভাষণে বলে যান যে সেটাই মুসলমানদেরকে কেয়ামতের আগ পর্যন্ত পালন করতে হবে, তা বাংলাদেশে পালন করে- অনেকটা জামাতে ইসলাম, জে এম বি -এসব দল।অনারব মুসলমানদের এসব
না বোঝার কারন হলো- তারা কখনই তাদের কোরান ও হাদিস কে মাতৃভাষায় পড়ার তাগিদ বোধ করে
না।আর তাই প্রকৃত পক্ষে তারা কট্টর মুসলমান হওয়া সত্ত্বেও ইসলামের
প্রায় কিছুই জানে না একমাত্র – নামাজ পড়া,
রোজা রাখা, কুরবানী দেয়া,
হজ্জ করা ছাড়া। এসব মুসলমানদেরকে তাই
নিজ মাতৃভাষায় কোরান হাদিস চর্চার ব্যবস্থা করা উচিত যাতে তারা প্রকৃত ইসলাম জানতে
পারে। কিন্তু এ বিষয়টির ফাক ফোকর বুঝতে পেরে মসজিদের ইমামরা প্রচার
করে – কোরান আরবীতে না পড়লে ছোয়াব নেই।অর্থাৎ তারা চায়
মানুষ যেন ইসলাম সম্পর্কে না জানতে পারে। এমনিতেই মুসলমানরা
হলো- পাঠ বিমূখ বা জ্ঞান বিমূখ মানুষ, তার ওপর যদি
বলা হয় কোরান আরবীতে না পড়লে ছোয়াব নেই, কে পড়তে যাবে নিজের মাতৃভাষায় কোরান?
এছাড়াও মোহাম্মদের বেশ কিছু কাজও সেই তৎকালীন সময়ে অসামাজিক
ও সভ্যতা বিবর্জিত ছিল। যেমন- তার পালিত পূত্র জায়েদের স্ত্রীকে
নানা কায়দায় তালাক দিয়ে পরে নিজে বিয়ে করা, তার নিজের কন্যা ফাতিমাকে তার চাচাত ভাই আলীর সাথে বিয়ে দেয়া, তার নিজের দুই কন্যাকে একই ব্যাক্তি ওসমানের সাথে বিয়ে দেয়া। সেই সময়ের আরব সমাজকে মোহাম্মদ বলেছেন অন্ধকার যুগ অথচ সেই অন্ধকার যুগেও পালিত
পূত্রবধুকে কেউ বিয়ে করত না। সন্তান দত্তক নেয়া
ছিল একট মহৎ কাজ। এ কাজটা কিভাবে মোহাম্মদের কাছে একটা অসভ্য কাজ হয় তা বুঝতে কষ্ট হয় না। শুধুমাত্র তার ব্যক্তিগত খায়েশ পূরণ অর্থাৎ জয়নাব কে বিয়ে করতে
গিয়েই তাকে এ মহৎ কাজটিকে বাতিল করতে হয়েছে। চতুর্থ খলিফা হযরত আলী ছিল তার আপন চাচাত ভাই। আলী ছিল মোহাম্মদের আপন চাচা আবু তালিবের পূত্র যে আবু তালিবের কাছে মোহাম্মদ নিজেই
অনেকটা দত্তক পূত্রের মত লালিত পালিত হন। সেই অনেকটা নিজের ভাই
আলীর সাথে মোহাম্মদ তার নিজের কন্যা ফাতিমার বিয়ে দেন। কিভাবে মোহাম্মদ এ ধরণের সভ্যতা বর্জিত কাজ করতে পারলেন তা বোঝা দুষ্কর। ফাতিমা ছিল আলীর ভাতিজি। তাও দুরের সম্পর্কিত
নয়।অন্ধকার যুগ থেকে বের করে আনার জন্য মোহাম্মদ ইসলাম প্রচার করছেন
অথচ তিনি চাচার সাথে ভাতিজির বিয়ে দিচ্ছেন, দৃশ্যটা ভীষণ দৃষ্টিকটু লাগে। বর্তমান সময়ে এমন
কোন পাষন্ড আছে যে তার ভাতিজিকে বিয়ে করবে ? অথচ এটা নবীর সুন্নাহ যা কেয়ামতের আগ পর্যন্ত অনুসরণ করা মুসলমানদের কর্তব্য। চাচাত বা খালাত ভাই-বোনের বিয়ে খুব একটা দৃষ্টি কটু নয়, কিন্তু চাচা বিয়ে করছে তার ভাতিজিকে, এটা কি চুড়ান্ত রকম অসামাজিক কাজ নয়? মানুষ তো আর জঙ্গলবাসী গুহাবাসী বন্য প্রানী নয় যে তারা যেটা
করবে ঠিক সেটাই করবে মানুষরা? অথচ দুনিয়ার তথাকথিত
শ্রেষ্ট মানুষ, সবচাইতে আদর্শবান মানুষ আল্লাহ প্রেরিত নবী
সমাজে প্রচলিত যাবতীয় নীতিবোধ, সামাজিকতাকে অবজ্ঞা
করে এমন সব কাজ করে গেছেন যা আজকের সভ্য মানুষ ভাবলে লজ্জিত বোধ করবে।---
************************************************************************
পর্ব-৮---মোহাম্মদ ও ইসলাম,
মোহাম্মদের নবুয়ত্ব দাবীর মূল ভিত্তি ইহুদি
ও খৃষ্টাণ ধর্ম। তাঁর বক্তব্য- মূসা নবীর তোরাতের পর ঈসা নবীর
আগমন ঘটে ও তিনি তাঁর ইঞ্জিল কিতাবের মাধ্যমে তোরাতের শিক্ষাকে পরিপূর্ন করেন। পরিশেষে ইঞ্জিল কিতাবের অসম্পূর্ণ শিক্ষা সম্পূর্ণ করার জন্য মোহাম্মদ এর আগমন
ঘটে নাট্য মঞ্চে ও আল্লাহর কাছ থেকে কোরান আমদানী করেন এবং বলে দেন- অত:পর আর কোন নবীর
আগমন ঘটবে না, তার প্রবর্তিত ইসলাম ধর্মই শেষ ধর্ম। যেহেতু ইহুদি ও খৃষ্টান ধর্মের ধারাবাহিকতায় ইসলাম ধর্ম এসেছে তাই কোরানের মধ্যে
তৌরাত ও ইঞ্জিল শরিফের অনেক উল্লেখ দেখা যায়। বলা বাহুল্য এসব উল্লেখের একটাই উদ্দেশ্য আর তা হলো প্রমান করা যে কোরান হলো পূর্ববর্তী
কিতাব সমূহের সর্বশেষ সংস্করণ। ফলত: অত:পর সকল ইহুদি
ও খৃষ্টানদেরকে তাদের ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্মে দিক্ষীত হওয়াই হলো একমাত্র কাজ আর
তাতেই তারা বেহেস্তে যাওয়ার নিশ্চয়তা পাবে। কোরান যে পূর্ববর্তী
কিতাব সমূহের সর্বশেষ সংস্করণ তা কিন্তু কোরানেই খুব পরিস্কার ভাবে বলা হয়েছে,
যেমন-
আমি আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি সত্যগ্রন্থ,
যা পূর্ববতী গ্রন্থ সমূহের সত্যায়নকারী এবং সেগুলোর বিষয়বস্তুর
রক্ষণাবেক্ষণকারী। অতএব, আপনি তাদের পারস্পারিক ব্যাপারাদিতে আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করুন এবং আপনার কাছে যে সৎপথ এসেছে, তা ছেড়ে তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করবেন না। আমি তোমাদের প্রত্যেককে একটি আইন ও পথ দিয়েছি। যদি আল্লাহ চাইতেন, তবে তোমাদের সবাইকে
এক উম্মত করে দিতেন, কিন্তু এরূপ করেননি-যাতে তোমাদেরকে যে ধর্ম
দিয়েছেন, তাতে তোমাদের পরীক্ষা নেন। অতএব, দৌড়ে কল্যাণকর বিষয়াদি অর্জন কর। তোমাদের সবাইকে আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। অতঃপর তিনি অবহিত করবেন সে বিষয়, যাতে তোমরা
মতবিরোধ করতে। কোরান, ০৫: ৪৮
উপরোক্ত আয়াত থেকে বোঝা যাচ্ছে- কোরান শুধুমাত্র
সর্বশেষ সংস্করণই নয়, বরং তা পূর্বোক্ত কিতাব সমূহ তৌরাত ও ইঞ্জিল
কিতাব কেও সত্যায়ন করে ও সংরক্ষণ করে। এর অর্থ ব্যপক। বর্তমানে ইসলামী পন্ডিতরা ব্যপকভাবে দাবি করে তৌরাত ও ইঞ্জিল কিতাব বিকৃত,
অথচ উক্ত কিতাবসমূহ সংরক্ষণের দায়ি দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহই গ্রহণ
করেছে যা দেখা যায় উক্ত আয়াতে।যা আল্লাহ স্বয়ং আল্লাহ
নিজে সংরক্ষণ করে তা কিভাবে সামান্য মানুষ বিকৃত করতে পারে তা ঠিক বোধ গম্য নয়। এখানে একটা মৌলিক সমস্যা আছে যুক্তি বিস্তারে, বিশেষ করে তথাকথিত ইসলামী পন্ডিতদের।তারা যে যুক্তি প্রয়োগ
করে কোরানকে অবিকৃত ও বিশুদ্ধ গ্রন্থ হিসাবে প্রমান করে, ঠিক একই যুক্তি তারা বাইবেলের ( তৌরাত ও ইঞ্জিল) ক্ষেত্রে প্রয়োগ করে না।উদাহরণ স্বরূপ- মুসলিম পন্ডিতরা খুব জোরে সোরে প্রচার করে, আল্লাহই কোরান সংরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছে, সেকারনে গত ১৪০০ বছর ধরে কোরান অবিকৃত ও বিশুদ্ধ থেকেছে। অথচ কোরানের বর্ণনা মোতাবেক, সেই একই আল্লাহ পূর্ববর্তী
কিতাব সমূহ সংরক্ষণের দায়িত্ব নেয়ার পরেও কিভাবে বাইবেল বিকৃত হয়?
যুক্তির খাতিরে যদি ধরে নেই, কোরান নাজিলের পর কোরানের মাধ্যমেই বাইবেলের বিষয়বস্তু সংরক্ষনের
কথা উক্ত আয়াতে বলা হয়েছে তাহলে একটা বিষয় নিশ্চিত মোহাম্মদের সময় পর্যন্ত বাইবেল ছিল
বিশুদ্ধ ও অবিকৃত, কারন আল্লাহই সেটার ব্যবস্থা করেছিলেন।যার প্রমান কোরানেই আছে, যেমন-
ইঞ্জিলের অধিকারীদের উচিত, আল্লাহ তাতে যা অবতীর্ণ করেছেন, তদানুযায়ী ফয়সালা করা। যারা আল্লাহ যা অবতীর্ণ
করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করে না, তারাই পাপাচারী। কোরান, ০৫:৪৭
আর আমি আদেশ করছি যে, আপনি তাদের পারস্পরিক ব্যাপারাদিতে আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তদনুযায়ী
ফয়সালা করুন; তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করবেন না এবং তাদের
থেকে সতর্ক থাকুন-যেন তারা আপনাকে এমন কোন নির্দেশ থেকে বিচ্যুত না করে, যা আল্লাহ আপনার প্রতি নাযিল করেছেন। অনন্তর যদি তার মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে জেনে নিন,
আল্লাহ তাদেরকে তাদের গোনাহের কিছু শাস্তি দিতেই চেয়েছেন। মানুষের মধ্যে অনেকেই নাফরমান।কোরান, ০৫: ৪৯
মোহাম্মদের কাছে খৃষ্টানরা তাদের যেসব সমস্যা
নিয়ে আসত, উপরোক্ত আয়াতে বলা হচ্ছে তাদের সমস্যাসমূহ
তাদের কিতাব তথা ইঞ্জিল দ্বারাই সমাধান করতেন।যদি তখন ইঞ্জিল বিকৃত হতো তাহলে বিকৃত কিতাবের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের কথা বলা
হতো না। যদি বিকৃত হতো- মোহাম্মদ বলতেন যে যেহেতু উক্ত কিতাব বিকৃত আর
তিনি হলেন শেষ নবী, তার কাছে সর্বশেষ কিতাব এসেছে তাই তাদের যে
কোন বিষয়ের সমাধান একমাত্র কোরান দিয়েই হবে। কিন্তু কোরানে দেখা
যাচ্ছে মোহাম্মদ বা আল্লাহ সেরকম কিছু বলছে না। এখন যে ইঞ্জিল কিতাব পাওয়া যায় তা আনুমানিক ৩০০ খৃষ্টাব্দেই অর্থাৎ মোহাম্মদের জন্মেরও
প্রায় ৩৫০ বছর আগে পূর্ণাঙ্গ আকার পায় বাইজান্টাইন সম্রাট কন্সটানটাইনের খৃষ্ট ধর্ম
গ্রহণের পর।সকল রকম উৎস সন্ধান করেই এ তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।সেসময়কার বহু পান্ডুলিপি বিভিন্ন যাদুঘরে সংরক্ষিতও আছে। ইঞ্জিল কিতাব কখন কিভাবে সংকলিত হয় তা এখানে গবেষণার বিষয় নয়। বিষয় হলো যেভাবেই সংকলিত হোক, যারাই সংকলিত করুক,
মোহাম্মদের সময়ে যে সংকলণ ছিল তাকে মোহাম্মদ বিশুদ্ধ হিসাবেই
গ্রহণ করেছেন। আর সে কিতাবই হুবহু এখন কোটি কোটি কপি পাওয়া
যায়।ঠিক যেমন পাওয়া যায় তৃতীয় খলিফা ওসমানের সংকলিত কোরানের কপি। এমতাবস্থায় কোরান যদি অবিকৃত ও বিশুদ্ধ হয়, ঠিক একই যুক্তিতে ইঞ্জিল কিতাব কেন অবিকৃত ও বিশুদ্ধ হবে না ? বলা বাহুল্য যে কায়দায় কোরান সংকলিত হয় অনেকটা সে কায়দাতেই কিন্তু
ইঞ্জিল শরিফ সংকলিত হয়।
ইঞ্জিল কিতাব যে আসলেই অবিকৃত ছিল মোহাম্মদের
আমলে তার আরও প্রমান নিম্নে-
হে আহলে-কিতাবগণ, কেন তোমরা আল্লাহর কালামকে অস্বীকার কর, অথচ তোমরাই তাঁর প্রবক্তা?কোরান, ০৩:৭০
হে আহলে কিতাবগণ, কেন তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে সংমিশ্রণ করছ এবং সত্যকে গোপন করছ, অথচ তোমরা তা জান।কোরান, ০৩:৭১
উপরের আয়াত থেকে বোঝা যাচ্ছে যে -খৃষ্টাণরা
মোহাম্মদের তথাকথিত আল্লাহর কালামকে অবিশ্বাস করছে কিন্তু তারা পুর্বোক্ত আল্লাহর কালাম
সমূহ জানে।
কিভাবে জানে ? কারন তাদের
কিতাব ইঞ্জিল তাদের কাছে আছে আর তা থেকেই তারা জানে। সেটা বিকৃত হলে তারা তা জানত না। তবে মোহাম্মদ তাদেরকে
অভিযুক্ত করছে এই বলে যে তারা তাদের জানার সাথে মিথ্যাকে মিশ্রণ করছে। অর্থাৎ তারা যা জানে
তা তারা প্রকাশ করছে না।সেটা হলো- বাইবেলে
নাকি মোহাম্মদের আবির্ভাবের কথা লেখা আছে তা তারা মানছে না, এছাড়াও তারা যীশুকে শুধুমাত্র একজন নবী না মেনে তাঁকে ঈশ্বরের পূত্র বা ঈশ্বর এভাবে
মনে করছে। যাহোক, কোরানের কোথাও লেখা
নাই যে মোহাম্মদের আমলে খৃষ্টান দের কাছে যে ইঞ্জিল শরিফ ছিল তা ছিল বিকৃত ও মনগড়া। আর বলা বাহুল্য সেই ইঞ্জিল কিতাবই বর্তমানে পাওয়া যায়।
এখন আমরা দেখি কেন মুসলিম পন্ডিতরা ইঞ্জিল
কিতাবকে বিকৃত দাবী করে? ইঞ্জিল কিতাবের মুল
শিক্ষাটা বিবেচনা করা যাক। খৃষ্টান পন্ডিতদের
মতে, এর মূল শিক্ষা হলো- যীশু আসলে স্বয়ং ঈশ্বর যিনি কুমারী মাতা
মরিয়মের গর্ভে জন্মগ্রহণ করে মানবজাতিকে উদ্ধার করতে এসেছিলেন। দুনিয়ায় আসার স্বাভাবিক পদ্ধতি যেমন কোন নারীর গর্ভ হতে আবির্ভুত হতে হবে,
তাই তাঁকে কুমারী মরিয়মের গর্ভে আশ্রয় নিতে হয় কোন পুরুষের ঔরস
ছাড়াই। পুরুষের ঔরসের মাধ্যমে আসলে তখন যীশু যে স্বয়ং ঈশ্বর এটা প্রমান
করাতে সমস্যা হতো।প্রকৃতির ধারা অনুসরণ করে অথচ একই সাথে অলৌকিক ভাবে কারো ঔরস
ছাড়াই স্বয়ং ঈশ্বর দুনিয়াতে যীশুর রূপ ধরে আসলেন । এসেই তিনি যখন বড় হলেন তখন তাঁর বানী প্রচার শুরু করলেন। তিনি যে বানী প্রচার করতেন তা তাঁকে কোন ফেরেস্তা এসে বলে যেত না। তিনি স্বয়ং যা বলতেন সেটাই ছিল ঈশ্বরের বানী। খেয়াল করতে হবে এখানেই মোহাম্মদের সাথে তাঁর একটা মৌলিক পার্থক্য অর্থাৎ মোহাম্মদের কাছে জিব্রাইল
নামক এক ৬০০ ডানা ওয়ালা ফেরেস্তা আল্লার বানী পৌছে দিত। যীশু বলেছেন-
শোন আমি শিঘ্রী আসছি, আমি দেবার জন্য পুরস্কার নিয়ে আসছি, যার যেমন কাজ সেই অনুসারে পুরস্কার পাবে, আমি আলফা ও ওমেগা, প্রথম ও শেষ,
আদি ও অন্ত। নূতন নিয়ম,
প্রকাশিত কালাম, ২২: ১২-১৩
তাকে দেখে আমি মরার মত তার চরণে লুটিয়ে পড়লাম।তখন তিনি আমার গায়ে ডান হাত দিয়ে বললেন- ভয় করো না।আমিই প্রথম ও আমিই শেষ, আমিই সেই চিরজীবন্ত,
আর দেখ আমি মরেছিলাম আর আমি চিরকাল বেচে আছি। মৃত্যূ ও পাতালের চাবিগুলি আমি ধরে আছি। নূতন নিয়ম,
প্রকাশিত কালাম, ২২: ১৭-১৮
এক জায়গায় যোহন যীশু সম্পর্কে সরাসরি বলছেন-
প্রভু ঈশ্বর বললেন, আমিই আলফা ও ওমেগা, আমিই সেই সর্ব
শক্তিমান, যিনি আছেন, যিনি ছিলেন ও যিনি আসছেন। নূতন নিয়ম,
প্রকাশিত কালাম, ২২: ০৮
লক্ষ্য করতে হবে এ কথাগুলোর মধ্যেই কিন্তু
আভাস পাওয়া যাচ্ছে যীশু পরোক্ষভাবে নিজেকে স্বয়ং ঈশ্বর হিসাবে তুলে ধরছেন।তাহলে তিনি আবার ইঞ্জিল শরিফে ঈশ্বরকে তাঁর পিতা বলেছেন কেন? কোন ব্যক্তি একই সাথে পিতা ও ঈশ্বর হয় কিভাবে? এটার ব্যখ্যা খৃষ্টাণ পন্ডিতরা দিয়ে থাকে এভাবে-ঈশ্বর তার সন্তান
মানব জাতিকে অপরিসীম ভালবাসে, কিন্তু মানব জাতি শয়তানের
প্ররোচণায় প্রায়ই ভ্রান্ত পথে চলে। এমতাবস্থায় মানব জাতিকে
উদ্ধার করতে স্বয়ং ঈশ্বরকে যখন আসতেই হচ্ছে-তিনি নিজে দুনিয়াতে এসে নিজেকে ঈশ্বর বলে
প্রচার করলে তা হতো প্রকৃতি বিরুদ্ধ। কারন ঈশ্বর যদি ইচ্ছা
করতেন তাহলে তিনি স্বর্গে বসেই দুনিয়ার সকল মানুষকে সঠিক পথে চালিত করতে পারতেন,
তাকে আর কষ্ট করে দুনিয়ায় আসতে হতো না। মানুষকে সত্য পথ শিখাতে মানুষ রূপেই দুনিয়াতে আসতে হবে।মানুষ রূপে আসার জন্যেই তাকে স্ত্রী গর্ভে জন্ম নিতে হচ্ছে।যেহেতু তার জন্ম আবার হচ্ছে কোন পুরুষের ঔরস ছাড়াই একটা অলৌকিক ভাবে, তাই তিনি নিজেকে ঈশ্বরের পূত্র বলেই পরিচয় দিচ্ছেন। কারন স্বয়ং ঈশ্বর হিসাবে পরিচয় দেয়ার পর নিজেকে ক্রুশে বিদ্ধ করে আত্মোৎসর্গ করলে তাতে ঈশ্বরের
সর্বময় ক্ষমতার বরখেলাপ হতো- ঈশ্বরকে তো কেউ ক্রুশে বিদ্ধ করে হত্যা করতে পারে না।স্বয়ং ঈশ্বর এখানে ঈশ্বরের পূত্র রূপ একজন মানুষ হিসাবে জগতের মানুষের পাপ নিজ
স্কন্ধে গ্রহণ করে ক্রুশে আত্মোৎসর্গ করছেন মানুষকে তিনি সীমাহীন ভালবাসেন একারনে। আবার এ যীশুই যে স্বয়ং ঈশ্বর তার প্রমান হিসাবে তিনি মৃত্যুর তিন দিন পর মৃত্যূ
থেকে পূনরুজ্জীবিত হয়ে ওঠেন শুধু এটা বুঝাতে যে তাঁর মৃত্যু নেই, তিনি অমর।অত:পর যে মানুষ যীশুকে(
প্রকারান্তরে ঈশ্বরকে) তার ত্রাণকর্তা রূপে স্বীকার করবে সে যীশুর এ আত্ম ত্যাগের মহিমার
কারনে মৃত্যুর পর ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করবে। আর সেটাই হওয়ার কথা- যীশু যদি স্বয়ং ঈশ্বর হন, তাকে ত্রাণকর্তা হিসাবে গ্রহণ করলে অত:পর ত্রাণ/উদ্ধার করার দায়িত্ব ঈশ্বরের ওপরেই
বর্তায়। সুতরাং খৃষ্টানদের মতে-যীশুর নিজেকে ঈশ্বরের পূত্র বা মনুষ্য
পূত্র(কারন মানুষের গর্ভজাতও বটে) বলাতে তার ঈশ্বরত্বে কোনরূপ সমস্যা হয় না। একই সাথে তার আত্মত্যাগ হলো মানুষের প্রতি তার অপরিসীম প্রেম ভালবাসা ও করুণার
বহি:প্রকাশ, আর এটাই খৃষ্টান ধর্মের মৌলিক ভিত্তি ও শক্তি। পুরো ইঞ্জিল শরিফে সেটাই বলা হয়েছে বিভিন্ন কায়দায়, ভাষায় ও কাহিনীতে। আর এ ইঞ্জিল শরিফ পুরো সংকলিত হয় মোহাম্মদ
জন্মেরও প্রায় ৩৫০ বছর আগে যাকে মোহাম্মদ ও তার আল্লাহ বিশুদ্ধ ও অবিকৃত হিসাবে স্বীকার
করে নিচ্ছেন। এভাবে স্বীকার করে নেয়ার অর্থই হচ্ছে- যীশুকে
স্বয়ং ঈশ্বর বা ইসলামের ভাষায় আল্লাহ হিসাবে স্বীকার করে নেয়া। কিন্তু এর পর পরই কোরানে দেখা যাচ্ছে-
আল্লাহ এমন নন যে, সন্তান গ্রহণ করবেন, তিনি পবিত্র ও মহিমাময়
সত্তা, তিনি যখন কোন কাজ করা সিদ্ধান্ত করেন,
তখন একথাই বলেনঃ হও এবং তা হয়ে যায়। কোরান, সূরা মারিয়াম, ১৯: ৩৫
তারা বলেঃ দয়াময় আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেছেন।নিশ্চয় তোমরা তো এক অদ্ভুত কান্ড করেছ। হয় তো এর কারণেই এখনই নভোমন্ডল ফেটে পড়বে, পৃথিবী খন্ড-বিখন্ড হবে এবং পর্বতমালা চূর্ণ-বিচুর্ণ হবে। এ কারণে যে, তারা দয়াময় আল্লাহর জন্যে সন্তান আহবান করে। অথচ সন্তান গ্রহণ করা দয়াময়ের জন্য শোভনীয় নয়। কোরান, ১৯:৮৮-৯২
এখানে বোঝাই যাচ্ছে- যীশুকে ঈশ্বরের পূত্র
বিষয়টির নিহিতার্থ মোহাম্মদ তথা আল্লাহ বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন। মোহাম্মদ নিতান্তই স্থূল অর্থে জৈবিক পূত্র হিসাবে ধারণা করে নিয়েছেন। অর্থাৎ ইতোপূর্বে
যে ইঞ্জিল শরিফকে কোরানে বিশুদ্ধ হিসাবে স্বীকার করে নেয়া হয়েছিল তা আবার এখানে অস্বীকার
করা হচ্ছে প্রকারান্তরে, কারন গোটা ইঞ্জিল শরিফে
যীশুকে সব সময়ই ঈশ্বরের পূত্র হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আর বলা বাহুল্য, ইঞ্জিল শরিফের কোথাও বলা নাই যে ঈশ্বর মারিয়ামের
সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে যীশুকে জন্ম দিয়েছে। কেন খৃষ্টানরা যীশুকে ঈশ্বরের পূত্র হিসাবে বর্ণনা করে তা ইতোপূর্বে বর্ণনা করা
হয়েছে যার মধ্যে সত্যিকার অর্থে একটা গুঢ় নিহিতার্থ আছে অথচ দু:খজনকভাবে মোহাম্মদ তা
উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এটা কি ধরণের যুক্তি
যে- মোহাম্মদ বলছেন ইঞ্জিল কিতাব যা যীশু বলে গেছেন, যা তার আশে পাশের খৃষ্টানদের কাছে রক্ষিত ছিল তা সত্য ও অবিকৃত অথচ তার ভিতরকার
বক্তব্য অসত্য ও বিকৃত? এটা কি নিজের সাথেই
নিজের স্ববিরোধীতা নয়? শুধু তাই নয়,
যীশুর জন্ম বৃত্তান্ত বর্ণনায়ও যুক্তিহীন কথা বার্তা দেখা যাচ্ছে,
যেমন-
অতঃপর তাদের থেকে নিজেকে আড়াল করার জন্যে
সে পর্দা করলো। অতঃপর আমি তার কাছে আমার রূহ প্রেরণ করলাম,
সে তার নিকট পুর্ণ মানবাকৃতিতে আত্নপ্রকাশ করল। কোরান, সূরা মারিয়াম, ১৯: ১৭
মারইয়াম বললঃ আমি তোমা থেকে দয়াময়ের আশ্রয়
প্রার্থনা করি যদি তুমি আল্লাহভীরু হও। কোরান, সূরা মারিয়াম, ১৯: ১৮
সে বললঃ আমি তো শুধু তোমার পালনকর্তা প্রেরিত,
যাতে তোমাকে এক পবিত্র পুত্র দান করে যাব। কোরান, সূরা মারিয়াম, ১৯: ১৯
১৯:১৭ আয়াতে পরিষ্কার ভাবে লেখা-অতঃপর আমি
তার কাছে আমার রূহ প্রেরণ করলাম, সে তার নিকট পুর্ণ
মানবাকৃতিতে আত্নপ্রকাশ করল- এখানে আমি অর্থাৎ আল্লাহ, তাই আমার রূহ অর্থ হবে আল্লাহর রূহ।সহজ সরল ব্যকারণে সেটাই বোঝায়। সুতরাং এখানে বলা হচ্ছে
আল্লাহ তার নিজের রূহ বা আত্মা মারিয়ামের কাছে প্রেরণ করল যে সেখানে পূর্ণ মানবাকৃতিতে
আত্মপ্রকাশ করল। যার সোজা অর্থ স্বয়ং আল্লাহই মানবাকৃতিতে
মারিয়ামের নিকট উপস্থিত হল। অথচ এর ঠিক পরেই ১৯:১৯
আয়াতে বলা হচ্ছে- আমি তো শুধু তোমার পালনকর্তা প্রেরিত, অর্থাৎ সে আল্লাহ
নয় বরং আল্লাহ প্রেরিত কোন ফেরেস্তা। এখন কোনটা সত্য- কে
মারিয়ামের কাছে এসেছিল- আল্লাহ নাকি ফেরেস্তা? কোরান পাঠ করে তো স্পষ্ট ভাবে কিছু বোঝা যাচ্ছে না, এটা এমন কোন দার্শনিক/রহস্যময় টাইপের কথা বার্তাও নয় যে বুঝতে কষ্ট হবে।এটা স্রেফ একটা ঘটনা আর তা বুঝতেই এত কষ্ট। অথচ কোরানে বলা হয়েছে- কোরান স্পষ্ট ভাষায় সুনির্দিষ্ট ভাবে প্রকাশিত হয়েছে সাধারণ
মানুষের বোঝার সুবিধার জন্য।এভাবে কোরান বুঝতে
যদি এত কঠিন হয়ে পড়ে সাধারণ মানুষ এটা পড়ে উল্টা পাল্টা সিদ্ধান্ত নিলে তার দায়ভার
কে নেবে? আল্লাহ নাকি মোহাম্মদ? অধিকন্তু, প্রথম বক্তব্য (আয়াত,
১৯:১৭)সত্য ধরে নিলে- আল্লাহ যীশু রূপে আবির্ভুত হলে আশ্চর্য
হওয়ার কি আছে? আল্লাহ তো সব পারে, মারিয়ামের সামনে মানুষ হিসাবে হাজির হতে পারলে তার গর্ভে মানুষ
হয়ে জন্মাতে পারবে না কেন? এছাড়াও আরও সমস্যা
আছে, যেমন-
অতঃপর তিনি সন্তানকে নিয়ে তার সম্প্রদায়ের
কাছে উপস্থিত হলেন। তারা বললঃ হে মারইয়াম, তুমি একটি অঘটন ঘটিয়ে বসেছ। হে হারূণ-ভাগিনী, তোমার পিতা অসৎ ব্যক্তি ছিলেন না
এবং তোমার মাতাও ছিল না ব্যভিচারিনী। অতঃপর তিনি হাতে সন্তানের
দিকে ইঙ্গিত করলেন। তারা বললঃ যে কোলের শিশু তার সাথে আমরা কেমন
করে কথা বলব? সন্তান বললঃ আমি তো আল্লাহর দাস। তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন এবং আমাকে নবী করেছেন। আমি যেখানেই থাকি, তিনি আমাকে বরকতময়
করেছেন। তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, যতদিন জীবিত থাকি, ততদিন নামায ও যাকাত
আদায় করতে।
এবং জননীর অনুগত থাকতে এবং আমাকে তিনি উদ্ধত ও হতভাগ্য করেননি। আমার প্রতি সালাম যেদিন আমি জন্মগ্রহণ করেছি, যেদিন মৃত্যুবরণ করব এবং যেদিন পুনরুজ্জীবিত হয়ে উত্থিত হব। কোরান, সূরা মারিয়াম, ১৯:২৭-৩৩
এখানে বলা হচ্ছে- আল্লাহ যীশুকে একজন নবী
করে তাকে একটা কিতাব দিয়েছে। আর বলা বাহুল্য,
ইঞ্জিলের কোথাও বলা নাই যে যীশু কখনও কোন ফিরিস্তার মাধ্যমে
আল্লাহর বানী প্রাপ্ত হয়েছেন।যীশু নিজ থেকে যা যা
বলেছেন, উপদেশ দিয়েছেন, অলৌকিক কান্ড করেছেন সব কিছু তার সাহাবীরা লিখে রেখেছে যার সংকলণকেই বাইবেলের নুতন
নিয়ম বা ইঞ্জিল শরিফ বলা হয়। ঠিক একারনে ইঞ্জিল
শরিফকে ইসলামের হাদিস শরিফের মত লাগে। এ বানী বলতে গিয়ে যীশু
কখনো বলেন নি এটা তার ঈশ্বরের বানী। তিনি সর্বদাই উত্তম
পুরুষে নিজের বানীই প্রচার করেছেন। দেখা গেছে ইঞ্জিল শরিফের
বর্ণনা অনুযায়ী, যীশু পরোক্ষভাবে নিজেকে ঈশ্বর হিসাবে প্রতিষ্ঠিত
করছেন।অর্থাৎ যীশু কোনমতেই একজন নবী নন। কোরানে আল্লাহ সেই ইঞ্জিল শরিফকে তার কিতাব হিসাবে স্বীকার করে নিচ্ছে তথা যীশুর
নিজের মুখের বানীকে আল্লাহর নিজের বানী রূপে স্বীকার করে নিচ্ছে তথা যীশুই যে আল্লাহর
মানবরূপ তা পরোক্ষে আল্লাহ স্বীকার করে নিচ্ছে।অথচ এর পরেই আবার কোরান বলছে যীশু অন্য দশজন নবীর মতই একজন নবী ছাড়া আর কিছু নয়। শুধু তাই নয়, খৃষ্টীয় ধর্মের মূল ভিত্তি ও অনুপ্রেরণা যীশুর
ক্রুশে মৃত্যুবরণের মাধ্যমে আত্মত্যাগের মহিমাকেই কোরান এক ফুৎকারে নস্যাৎ করে দেয়, যেমন-
আর তাদের একথা বলার কারণে যে, আমরা মরিয়ম পুত্র ঈসা মসীহকে হত্যা করেছি যিনি ছিলেন আল্লাহর
রসূল। অথচ তারা না তাঁকে হত্যা করেছে, আর না শুলীতে চড়িয়েছে, বরং তারা এরূপ ধাঁধায়
পতিত হয়েছিল। বস্তুতঃ তারা এ ব্যাপারে নানা রকম কথা বলে,
তারা এক্ষেত্রে সন্দেহের মাঝে পড়ে আছে, শুধুমাত্র অনুমান করা ছাড়া তারা এ বিষয়ে কোন খবরই রাখে না। আর নিশ্চয়ই তাঁকে তারা হত্যা করেনি। বরং তাঁকে উঠিয়ে নিয়েছেন
আল্লাহ তা’আলা নিজের কাছে। আর আল্লাহ হচ্ছেন মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। কোরান, সূরা নিসা,০৪:১৫৭-১৫৮
এক ফুৎকারে কোরান যীশু খৃষ্টের
ক্রুশে আত্মত্যাগকে নস্যাৎ করে দিয়ে বস্তুত কোরান বা ইসলাম নিজেই নিজেকে নস্যাৎ করে দেয়।এটা অনেকটা আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতাবাদের পরম শূন্য সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বানী করার
মত যাতে বলা হয়- এ ধরনের ভবিষ্যদ্বানী করার অর্থ আপেক্ষিকতাবাদের অপমৃত্যু। উপরোক্ত আয়াতের ব্যখ্যা দিতে গিয়ে ইসলাম বলে যে- বাস্তবে যীশুকে ক্রুশে বিদ্ধ করে
হত্যা করা হয়নি। যখন তাকে ক্রুশে বিদ্ধ করা হয় তখন আল্লাহর
তাঁর স্থানে যীশুর মত চেহারার অন্য একজনকে সেখানে প্রতিস্থাপন করে যীশুকে স্বশরীরে
বেহেস্তে নিয়ে যান যা দেখা যাচ্ছে আয়াতের এ কথায়- বরং তাঁকে উঠিয়ে নিয়েছেন আল্লাহ তা’আলা নিজের কাছে। তার অর্থ যীশু মারা
যান নি, জীবিত অবস্থায় তাকে বেহেস্তে নিয়ে যাওয়া হয়েছে
আর সেখানে এখনও জীবিত আছেন। তাকে কেয়ামতের আগে
পূনরায় পৃথিবীতে প্রেরণ করা হবে দুনিয়ার মানুষকে উদ্ধারের জন্য। এ বিষয়টি কিন্তু যীশু খৃষ্টের মূল শিক্ষা বা অনুপ্রেরণাকে বাতিল করে দেয়।খৃষ্টান ধর্মের মূল অনুপ্রেরণা হলো- মানবজাতির পাপের জন্য যীশু খৃষ্টের আত্মত্যাগ
যা পরিশেষে মানবজাতির জন্য তার অপরিসীম ভালবাসা ও প্রেমের নিদর্শণও। খৃষ্টান ধর্মের মূল বিষয়ও এটাই। এ আত্মত্যাগের কারনেই
পরবর্তীতে মানুষ দলে দলে খৃষ্টান ধর্ম গ্রহণ করেছে।আত্মত্যাগের এ মহান নিদর্শণ না থাকলে মানুষ যীশুর বানী গ্রহণ করে খৃষ্টান হতো না। এখন কোরানের বানী অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে- খৃষ্টান ধর্মের এ মুল ভিত্তি বা অনুপ্রেরণা
ছিল ভুল কারন যীশু তো ক্রুশ বিদ্ধ হয়ে আত্মত্যাগ করেন নি।যা ইসলাম ধর্মের মতে আল্লাহর একটা প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়। ইসলাম ধর্ম মতে- যীশু যদি শুধুমাত্র একজন নবীও হন, তাহলে আল্লাহ যীশু খৃষ্টকে ক্রুশ থেকে তুলে নিয়ে যীশুর অনুসারীদের সামনে যে একটা
মহা প্রতারণা করলেন এর কারন কি ? পরবর্তীতে এ মহাপ্রতারণার
অনুপ্রেরণার মাধ্যমেই কিন্তু খৃষ্টান ধর্ম মানুষের মাঝে প্রচারিত হয়েছে। তাহলে প্রশ্ন হলো- আল্লাহ কেন এরকম মহা প্রতারণা করে মানুষকে মোহাম্মদের আবির্ভাবের
আগে শত শত বছর ধরে ভুল পথে চালিত করলেন? আর প্রতারণার
শুরুই খোদ যীশু খৃষ্টের তিরোধানের পর থেকেই। তার অর্থ খৃষ্টানরা
একেবারে শুরু থেকেই ভুল পথে চালিত হয়ে আসছে। আল্লাহ কেন মানুষকে
যীশু খৃষ্টের মত একজন নবী পাঠিয়ে একেবারে শুরু থেকেই মানুষকে বিপথে চালিত করে আসছিল?
তার চাইতে গুরুতর প্রশ্ন- আসলে মোহাম্মদ বা
তাঁর আল্লাহ কোরানের মাধ্যমে মানুষের সাথে মহা প্রতারণা করছে না তো ?
কোন টা সত্য? ইঞ্জিল শরিফে দেখা যায়- মৃত যীশু কবরে তিন দিন থাকার পর আবার পূন:র্জীবন পেয়ে তার
সাহাবীদের সামনে সাক্ষাত দিয়ে উপদেশ দিচ্ছেন, তখনও তো তিনি বলেন নি যে তিনি তখন মারা যান নি ও তার স্থলে অন্য একজনকে ক্রুশে
বিদ্ধ করা হয়েছিল। যাকে ক্রুশে বিদ্ধ করা হয় সে তো কোন মহান
পুরুষ ছিল না, সে তো আর কবর থেকে তিন দিন পর আবার পূনর্জীবিত
হতে পারত না। অথচ ইঞ্জিল শরিফে বর্ণনা করা হয়েছে যে- তিন
দিন পর যখন তাঁর সাহাবীরা তাঁকে কবরে দেখতে গেলে সেখানে তাকে দেখতে পাওয়া যায়নি।যীশুর শব সেখানে ছিল না, বরং যীশু জীবিতাবস্থায়
সকলের সাথে সাক্ষাত করেন ও কথা বলেন। এ বিষয়ে জানতে ইঞ্জিল
শরিফ দেখা যেতে পারে এখানে- http://www.asram.org/texts/bengalibible.html অথচ মোহাম্মদের সময়কালে ঠিক এসব বর্ণনাই কিন্তু ইঞ্জিল শরিফে
ছিল আর তার আল্লাহ কখনও বলে নি যে উক্ত কিতাব বিকৃত, বরং প্রকারান্তরে বলেছে তা সঠিক আছে। কোরান নিজেই নিজের
সাথে স্ববিরোধীতা করছে তার নিদর্শন নিম্নে-
আমার প্রতি সালাম যেদিন আমি জন্মগ্রহণ করেছি,
যেদিন মৃত্যুবরণ করব এবং যেদিন পুনরুজ্জীবিত হয়ে উত্থিত হব। এই মারইয়ামের পুত্র ঈসা। সত্যকথা, যে সম্পর্কে লোকেরা বিতর্ক করে। কোরান,১৯:৩৩
এখানে বলা হচ্ছে- মারিয়ামের পূত্র ঈসা জন্মগ্রহণ
করে একদিন মৃত্যূ বরণ করবেন এবং পরিশেষে আবার পূন:র্জীবন লাভ করবেন।বলা বাহুল্য ঘটনাটা যখন প্রায় ২০০০ বছর আগের, তার অর্থ ঈসা তখন জন্ম গ্রহণ করে মারাও গেছেন। অথচ পূর্বোক্ত ০৪:১৫৭-১৫৮ আয়াত মোতাবেক দেখা যাচ্ছে আল্লাহ স্বয়ং ঈসাকে জীবিত অবস্থায়
নিজের কাছে নিয়ে গেছেন।জীবিত অবস্থায়ই যে আল্লাহর ঈসাকে তার নিকট নিয়ে গেছে তা পরিস্কার
করতে বলা হচ্ছে-আর নিশ্চয়ই তাঁকে তারা হত্যা করেনি। বরং তাঁকে উঠিয়ে নিয়েছেন আল্লাহ তা’আলা নিজের কাছে। বেহেস্তে তো মৃত্যু নেই। সুতরাং তিনি আবার যখন
কেয়ামতের আগে দুনিয়াতে আবির্ভূত হবেন তা হবে শুধুমাত্র তাঁর পূনরাগমন, পূন:রুজ্জীবন নয়। তার অর্থ কোরানে যে
পূনরুজ্জীবিত হওয়ার কথা বলা হচ্ছে তা স্ববিরোধী ও অযৌক্তিক। অথচ ইঞ্জিলে কিন্তু পরিস্কার ভাবে এ পূনরুজ্জীবনের বিষয়টি বর্ণিত আছে, তা হলো ঈসা মৃত্যুর তিন দিন পর পূনর্জীবিত হয়ে তার সাহাবীদের
সাথে দেখা দেন, অত:পর তিনি বেহেস্তে চলে যান, আবার একদিন দুনিয়াতে আসবেন পূণ্যবান মানুষকে উদ্ধার করতে,
বলা বাহুল্য সেটা হবে তার পূনরাগমন, পূনর্জীবন নয়। ইঞ্জিল শরিফ মৃত্যু, পূনর্জীবন ও পূনরাগমন এসব ঘটনার বর্ণনা করে ধারাবাহিকতা ও যৌক্তিকতা
বজায় রেখেছে পক্ষান্তরে কোরান এ ব্যপারে অযৌক্তিক ও স্ববিরোধী বক্তব্য প্রদাণ করেছে। যীশুকে জীবিত অবস্থায় স্বশরীরে আল্লাহ বেহেস্তে নিয়ে যাওয়ায় আল্লাহ নিজেই নিজের
ও নিজ সৃষ্ট প্রকৃতির নিয়ম ভঙ্গ করেছে। কোরানে আল্লাহ বলেছে-সে
নিজে ছাড়া কেউ অমর নয়।যীশুকে জীবিত অবস্থায় বেহেস্তে নিয়ে যাওয়াতে যীশুকে অমর প্রমান
করা হয়েছে,কারন বেহেস্তে কেউ মারা যায় না। এভাবে যীশুকে অমর প্রমান করে ফলত: যীশুই যে প্রকারান্তরে আল্লাহ স্বয়ং সেটা প্রমান
করছে অথচ আবার সেই কোরানে বলছে যীশু একজন সাধারন মরণশীল নবী ছাড়া কেউ নয়, যা বলাবাহুল্য কোরানের মস্ত আর এক স্ববিরোধীতা। এভাবেই বাইবেলকে প্রথমে বিশুদ্ধ হিসাবে গ্রহণ করে , পরে তার সাথে বিরোধ সৃষ্টি করে কোরান তথা ইসলাম কি নিজেই নিজের পতন ঘটায় নি ?