দীপকের পড়ার টেবিলটি দেখলে লোকে
আর যাই ভাবুক না কেনো “পড়ার টেবিল” বলে কেউ ভুলেও ভাববে না। কি নেই টেবিলটির
উপর?
হেডফোন, মোবাইলের চার্জার, ল্যাপটপের চার্জার, মালন্ঞ বাসের টিকিট
থেকে শুরু করে কিছুক্ষণ আগে খাওয়া কলার খোসা পর্যন্ত আছে! শুধু নেই
বই-খাতা। ওর নাকি পড়ার জন্য বই-খাতার প্রয়োজন হয় না। ল্যাপটপ হলেই যথেষ্ট।
যতো কাজ,পড়াশুনা সব ঐ ল্যাপটপের মধ্যে। ইউনিভার্সিটি জীবনে গত ৪বছরে শেষ
খাতা যে কবে কিনেছে তা ও ভুলেই গেছে। লাল মলাটের একটি খাতা দিয়েই গত কয়েক
বছর ক্লাশ চলচ্ছে। বন্ধুরা দুষ্টুমি করে এই খাতার নাম দিয়েছে “টালি খাতা”।
কাল একটি প্রজেক্ট জমা দিতে হবে সেটা নিয়ে এতটিই ব্যস্ত যে কখন ওর মা এসে ওর ঘরে ঢুকলেন তা টেরই পেল না দীপক । পিছন থেকে ওর মাথার চুলগুলো আলতো করে টানতে টানতে জানতে চাইলেন,”কিরে খুব ব্যস্ত? পরীক্ষা নাকি?”। মায়ের এই চুল টেনে দেয়ার ব্যাপারটি দীপকের খুব ভাল লাগে। ল্যাপটপ কোল থেকে রেখে মাকে জড়িয়ে ধরল ঠিক একটি বাচ্চা ছেলের মতো। সারাদিনের ব্যস্ততার মাঝে একটু প্রশান্তি খুঁজে পেল। জবাব দিল,”না।
আবার ল্যাপটপটি কোলে নিয়ে কাজ শুরু করল। দীপকের মা ব্যাপারটি খেয়াল করলেন। কিন্তু কিছু বললেন না। শুধু “ঠিক আছে। তুই কাজ কর। আমার সিরিয়ালের সময় হয়ে গেছে ” বলে ঘর থেকে বের হয়ে গেলেন। ল্যাপটপ নিয়ে চুপচাপ বসে রইলদীপক । মা এমন একটি খবর দিলেন যা কোনো ভাবেই সুখবরের পর্যায়ে পড়ে না। আবার খারাপ খবরও না। লিয়া ওর ছোটবেলার সব থেকে ভাল বন্ধু। ফোনটি হাতে নিয়ে একবার ভাবলো কল দিবে। আবার পরক্ষণেই একটু রাগ হলো এই ভেবে যে,'' আমি কেন তোকে কল দিব? তুই নিজে দিতে পারিস না? বিয়ের কথা বলতে বুঝি লজ্জা করে? তাহলে বিয়ে করবি কিভাবে?” ফোনটি রেখে প্রজেক্টের কাজে মনোযোগ দেয়ার চেষ্টা করলো। কিন্তু পারল না। কাজ বাদ দিয়ে ল্যাপটপের personal folder এ রাখা ওর আর লিয়ার পুরনো ছবি গুলো দেখতে শুরু করলো।'' মুটিটা নাকি শুকিয়ে গেছে? দেখতে কেমন লাগে কে জানে? কতদিন তোকে দেখি নারে লিয়া ” – মনে মনে কথাগুলো আউরাতে লাগল দীপক।
স্কুল জীবনের প্রথম থেকে লিয়া আর দীপক খুব ভাল বন্ধু। সব সময় একসাথে বসতো ক্লাশে। কিন্তু দীপক যখন তার অন্য বন্ধুদের সাথে বসতো তখন লিয়ার সে কি অভিমান। দীপকর মায়ের কাছে এই নিয়ে যে কতো অভিমান। মায়ের বকা খেয়ে উল্টো দীপক লিয়ার সাথে অভিমান করতো। তখন লিয়াকেই দীপকের রাগ ভাঙ্গাতে হতো প্রিয় চকলেট দিয়ে। বাসা থেকে দীপক কিছুতেই টিফিন আনতে চাইত না। কিন্তু লিয়ার সাথে ঠিকই ভাগ করে খেত লিয়ার টাফিন। এমন করেই কেটে গেল ওদের স্কুল জীবনটি। কলেজে প্রবেশের পর নতুন অনেক বন্ধু হল। দীপক বরাবরই ছিল careless। নতুন বন্ধুদের সময় দিতে যেয়ে লিয়ার থেকে একটু একটু করে দূরে সরে যাচ্ছিল তা ওর খেয়াল ছিল না। লিয়া ঠিকই দীপকের care নিত। নোট দেয়া, birthday wish করা, gift দেয়া, টিফিন share করা, দীপকের ভাল লাগার সব কাজ গুলো করতো। কিন্তু দীপকের এসবে নজর দেয়ার সময় ছিল না। লিয়ার birthday_র কথা পর্যন্ত সে ভুলে গেল। আশ্চর্য,তাতে
HSC পরীক্ষার পর হঠাৎ লিয়ার পুরো পরিবার শহর ছেড়ে গ্রামে চলে যায়। কারণটি আজও দীপক জানে না। লিয়ার অনুপস্থিতি প্রথমে টের না পেলেও আস্তে আস্তে তা টের পেল দীপক। নিজের ভুল বুঝতে পারলো। কিন্তু লিয়া যোগাযোগ কমিয়ে দিল। লিয়ার এই অবহেলা দীপক সহ্য করতে পারল না। টের পেল লিয়ার জন্য ওর মনের কোণে অদ্ভুত এক টানের।একেই ভালবাসা বলে কিনা কে জানে?
যখনই লিয়ার সাথে যোগাযোগ হতো তখনই ও নানা ভাবে বুঝাতে চাইতো ওর মনের কথা। কিন্তু লিয়া যেন কিছুই বুঝতো না। দীপক ভেবেছিল লিয়া ইচ্ছা করেই ঢং করছে। প্রতিশোধ নিচ্ছে ওকে অবহেলা করার জন্য। খুব রাগ হতো। তারপরও দীপক হাল ছাড়েনি। তবে শেষ পর্যন্ত যখন লিয়ার দিক থেকে কোন সাড়া পেল না তখন অন্বয় যোগাযোগ বন্ধ করে দিল লিয়ার সাথে। লিয়াও আর যোগাযোগ করল না।
জানালা দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আজকের দিনের কথা ভাবছিল লিয়া। আজ একটি বিশেষ দিন ওর আর ওর পরিবারের জন্য একটি বিশেষ দিন। প্রতি বছর এই দিনটি এলেও এই তারিখটি আসে চার বছর পর পর। সেই দিনটির কথা ভাবতে ভাবতে ওর চোঁখের কোণ দিয়ে এক ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়লো ওর গাল বেয়ে। হঠাৎ ওর মোবাইলের রিংটোনের শব্দ পেয়ে ভাবনায় ছেদ পড়লো। স্ক্রিনে নামটা দেখতেই লিয়ার ভিতরে যেন একটি বিদ্যুৎ চমকের! দীপক তাকে কল দিয়েছে এতো দিন পর! রিসিভ করতেই,
দীপক: কিরে মুটি, কেমন আছিস?
লিয়া: ভাল। তুই? (লিয়ার কথায় আগের মত উচ্ছ্বাস নেই।)
দীপক: আমি তো all time joss. শুনলাম তোর নাকি বিয়ে? ঢাকায় এলি কবে? বাসায় আসলি না কেন? লিয়া কথায় স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করে।
লিয়া: গত সপ্তাহে এসেছি। বিয়ের কেনাকাটায় ব্যস্ত। তাই সময় পাচ্ছি না।
দীপক: ও... আচ্ছা, তুই পড়াশোনা ছাড়লি কেন? তোর না কতো স্বপ্ন ছিল?
লিয়া: মাঝে মাঝে সবার খুশির জন্য নিজের স্বপ্ন, চাওয়া পাওয়া গুলোকে বির্সজন দিতে হয়। আমিও পরিবারের আর সবার কথা ভেবে তাই করলাম।
দীপক: বাহ্, কত্ত লক্ষ্মী মেয়ে! তা তোর হবু বর আমার থেকেও খুব handsome নাকি যে আমাকে বাদ দিয়ে ঐ ব্যাটির গলায় ঝুলতে যাচ্ছিস?
লিয়া: মানে? আর তোকে দেখিনা চার বছর হল।
দীপক: তাও তো কথা। এখনকার দীপককে দেখলে আর ঐ ব্যাটিকে বিয়ে করতে চাইতি না। জানিস,আমার উপর কতো মেয়ে crash খেয়েছে?
লিয়া: অন্বয়, প্লিজ চুপ কর। ভাল লাগছে না এসব শুনতে।
দীপক: তুই তো দেখি সেই আগের মতই হিংসুটি আছিস।
লিয়া: তুই তো বরাবরই careless.
দীপক: ভুল বললি। careless হলে তোর চলে যাওয়াটাকে মেনে নিতাম। কখনো তোকে ফিরাতে চাইতাম না।
লিয়া: আচ্ছা এসব কথা বাদদে। অন্য কথা বল।
দীপক: লিয়া,আমি তোকে ভালবাসি। তুই জানিস না? বুঝিস না?
লিয়া: না। বুঝি না। আর আমি তোকে ভালবাসি না। আচ্ছা,আমি এখন রাখছি।
অনেক কষ্টে কথা গুলো বলে লিয়া লাইনটি কেটে দেয় দীপককে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে। লাইনটি কেটে যেতেই দীপক প্রচন্ড রাগে ওর মোবাইলটি মেঝের উপর আছাড় মারে। এদিকে লিয়া ওর বেডরুমের দেয়ালে টানানো ওর আর পিয়ার ছবিটির দিকে তাকিয়ে অঝোরে কাঁদতে শুরু করে।
“আপি, আমি তো তোর মত স্বার্থপর না যে নিজের ভালবাসার জন্য বাবা-মা, সবাইকে ছেড়ে চলে যাব। আমি ছাড়া বাবা-মা যে এখন বড্ড একা। আমিই তো এখন তাদের শেষ আশা। তুই তো জানিস, আমি দীপককে কতটি ভালবাসি। তা সত্ত্বেও আমি এ কথা ওকে আজও বলিনি। Sorry, দীপক। আমি আপির মত স্বার্থপর হতে পারলাম না। হয়তো তোর কাছে স্বার্থপর। কিন্তু আজও আমি তোকে অনেক ভালবাসিরে দীপক। অনেক বেশি ভালবাসি।”
কাল একটি প্রজেক্ট জমা দিতে হবে সেটা নিয়ে এতটিই ব্যস্ত যে কখন ওর মা এসে ওর ঘরে ঢুকলেন তা টেরই পেল না দীপক । পিছন থেকে ওর মাথার চুলগুলো আলতো করে টানতে টানতে জানতে চাইলেন,”কিরে খুব ব্যস্ত? পরীক্ষা নাকি?”। মায়ের এই চুল টেনে দেয়ার ব্যাপারটি দীপকের খুব ভাল লাগে। ল্যাপটপ কোল থেকে রেখে মাকে জড়িয়ে ধরল ঠিক একটি বাচ্চা ছেলের মতো। সারাদিনের ব্যস্ততার মাঝে একটু প্রশান্তি খুঁজে পেল। জবাব দিল,”না।
প্রজেক্ট জমা দিতে হবে। “কি জানি বাবা, আমি অতোশত বুঝি না।” মায়ের কথা শুনে একটু হাঁসলো দীপক। ”আচ্ছা, যে
কথার জন্য এসেছি তা হলো, লিয়ার সাথে আজ দেখা হয়েছিল। ওর বিয়ে ঠিক হয়েছে
আগামী মাসে। তোকে বলেছে কল দিতে। বেচারি, কেমন যেন শুকিয়ে গেছে। প্রথমে তো
চিনতেই পারিনি।” মায়ের কথা শেষ হতেই দীপক একটু অন্যমনষ্ক হয়ে গেল।
আবার ল্যাপটপটি কোলে নিয়ে কাজ শুরু করল। দীপকের মা ব্যাপারটি খেয়াল করলেন। কিন্তু কিছু বললেন না। শুধু “ঠিক আছে। তুই কাজ কর। আমার সিরিয়ালের সময় হয়ে গেছে ” বলে ঘর থেকে বের হয়ে গেলেন। ল্যাপটপ নিয়ে চুপচাপ বসে রইলদীপক । মা এমন একটি খবর দিলেন যা কোনো ভাবেই সুখবরের পর্যায়ে পড়ে না। আবার খারাপ খবরও না। লিয়া ওর ছোটবেলার সব থেকে ভাল বন্ধু। ফোনটি হাতে নিয়ে একবার ভাবলো কল দিবে। আবার পরক্ষণেই একটু রাগ হলো এই ভেবে যে,'' আমি কেন তোকে কল দিব? তুই নিজে দিতে পারিস না? বিয়ের কথা বলতে বুঝি লজ্জা করে? তাহলে বিয়ে করবি কিভাবে?” ফোনটি রেখে প্রজেক্টের কাজে মনোযোগ দেয়ার চেষ্টা করলো। কিন্তু পারল না। কাজ বাদ দিয়ে ল্যাপটপের personal folder এ রাখা ওর আর লিয়ার পুরনো ছবি গুলো দেখতে শুরু করলো।'' মুটিটা নাকি শুকিয়ে গেছে? দেখতে কেমন লাগে কে জানে? কতদিন তোকে দেখি নারে লিয়া ” – মনে মনে কথাগুলো আউরাতে লাগল দীপক।
স্কুল জীবনের প্রথম থেকে লিয়া আর দীপক খুব ভাল বন্ধু। সব সময় একসাথে বসতো ক্লাশে। কিন্তু দীপক যখন তার অন্য বন্ধুদের সাথে বসতো তখন লিয়ার সে কি অভিমান। দীপকর মায়ের কাছে এই নিয়ে যে কতো অভিমান। মায়ের বকা খেয়ে উল্টো দীপক লিয়ার সাথে অভিমান করতো। তখন লিয়াকেই দীপকের রাগ ভাঙ্গাতে হতো প্রিয় চকলেট দিয়ে। বাসা থেকে দীপক কিছুতেই টিফিন আনতে চাইত না। কিন্তু লিয়ার সাথে ঠিকই ভাগ করে খেত লিয়ার টাফিন। এমন করেই কেটে গেল ওদের স্কুল জীবনটি। কলেজে প্রবেশের পর নতুন অনেক বন্ধু হল। দীপক বরাবরই ছিল careless। নতুন বন্ধুদের সময় দিতে যেয়ে লিয়ার থেকে একটু একটু করে দূরে সরে যাচ্ছিল তা ওর খেয়াল ছিল না। লিয়া ঠিকই দীপকের care নিত। নোট দেয়া, birthday wish করা, gift দেয়া, টিফিন share করা, দীপকের ভাল লাগার সব কাজ গুলো করতো। কিন্তু দীপকের এসবে নজর দেয়ার সময় ছিল না। লিয়ার birthday_র কথা পর্যন্ত সে ভুলে গেল। আশ্চর্য,তাতে
HSC পরীক্ষার পর হঠাৎ লিয়ার পুরো পরিবার শহর ছেড়ে গ্রামে চলে যায়। কারণটি আজও দীপক জানে না। লিয়ার অনুপস্থিতি প্রথমে টের না পেলেও আস্তে আস্তে তা টের পেল দীপক। নিজের ভুল বুঝতে পারলো। কিন্তু লিয়া যোগাযোগ কমিয়ে দিল। লিয়ার এই অবহেলা দীপক সহ্য করতে পারল না। টের পেল লিয়ার জন্য ওর মনের কোণে অদ্ভুত এক টানের।একেই ভালবাসা বলে কিনা কে জানে?
যখনই লিয়ার সাথে যোগাযোগ হতো তখনই ও নানা ভাবে বুঝাতে চাইতো ওর মনের কথা। কিন্তু লিয়া যেন কিছুই বুঝতো না। দীপক ভেবেছিল লিয়া ইচ্ছা করেই ঢং করছে। প্রতিশোধ নিচ্ছে ওকে অবহেলা করার জন্য। খুব রাগ হতো। তারপরও দীপক হাল ছাড়েনি। তবে শেষ পর্যন্ত যখন লিয়ার দিক থেকে কোন সাড়া পেল না তখন অন্বয় যোগাযোগ বন্ধ করে দিল লিয়ার সাথে। লিয়াও আর যোগাযোগ করল না।
জানালা দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আজকের দিনের কথা ভাবছিল লিয়া। আজ একটি বিশেষ দিন ওর আর ওর পরিবারের জন্য একটি বিশেষ দিন। প্রতি বছর এই দিনটি এলেও এই তারিখটি আসে চার বছর পর পর। সেই দিনটির কথা ভাবতে ভাবতে ওর চোঁখের কোণ দিয়ে এক ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়লো ওর গাল বেয়ে। হঠাৎ ওর মোবাইলের রিংটোনের শব্দ পেয়ে ভাবনায় ছেদ পড়লো। স্ক্রিনে নামটা দেখতেই লিয়ার ভিতরে যেন একটি বিদ্যুৎ চমকের! দীপক তাকে কল দিয়েছে এতো দিন পর! রিসিভ করতেই,
দীপক: কিরে মুটি, কেমন আছিস?
লিয়া: ভাল। তুই? (লিয়ার কথায় আগের মত উচ্ছ্বাস নেই।)
দীপক: আমি তো all time joss. শুনলাম তোর নাকি বিয়ে? ঢাকায় এলি কবে? বাসায় আসলি না কেন? লিয়া কথায় স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করে।
লিয়া: গত সপ্তাহে এসেছি। বিয়ের কেনাকাটায় ব্যস্ত। তাই সময় পাচ্ছি না।
দীপক: ও... আচ্ছা, তুই পড়াশোনা ছাড়লি কেন? তোর না কতো স্বপ্ন ছিল?
লিয়া: মাঝে মাঝে সবার খুশির জন্য নিজের স্বপ্ন, চাওয়া পাওয়া গুলোকে বির্সজন দিতে হয়। আমিও পরিবারের আর সবার কথা ভেবে তাই করলাম।
দীপক: বাহ্, কত্ত লক্ষ্মী মেয়ে! তা তোর হবু বর আমার থেকেও খুব handsome নাকি যে আমাকে বাদ দিয়ে ঐ ব্যাটির গলায় ঝুলতে যাচ্ছিস?
লিয়া: মানে? আর তোকে দেখিনা চার বছর হল।
দীপক: তাও তো কথা। এখনকার দীপককে দেখলে আর ঐ ব্যাটিকে বিয়ে করতে চাইতি না। জানিস,আমার উপর কতো মেয়ে crash খেয়েছে?
লিয়া: অন্বয়, প্লিজ চুপ কর। ভাল লাগছে না এসব শুনতে।
দীপক: তুই তো দেখি সেই আগের মতই হিংসুটি আছিস।
লিয়া: তুই তো বরাবরই careless.
দীপক: ভুল বললি। careless হলে তোর চলে যাওয়াটাকে মেনে নিতাম। কখনো তোকে ফিরাতে চাইতাম না।
লিয়া: আচ্ছা এসব কথা বাদদে। অন্য কথা বল।
দীপক: লিয়া,আমি তোকে ভালবাসি। তুই জানিস না? বুঝিস না?
লিয়া: না। বুঝি না। আর আমি তোকে ভালবাসি না। আচ্ছা,আমি এখন রাখছি।
অনেক কষ্টে কথা গুলো বলে লিয়া লাইনটি কেটে দেয় দীপককে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে। লাইনটি কেটে যেতেই দীপক প্রচন্ড রাগে ওর মোবাইলটি মেঝের উপর আছাড় মারে। এদিকে লিয়া ওর বেডরুমের দেয়ালে টানানো ওর আর পিয়ার ছবিটির দিকে তাকিয়ে অঝোরে কাঁদতে শুরু করে।
“আপি, আমি তো তোর মত স্বার্থপর না যে নিজের ভালবাসার জন্য বাবা-মা, সবাইকে ছেড়ে চলে যাব। আমি ছাড়া বাবা-মা যে এখন বড্ড একা। আমিই তো এখন তাদের শেষ আশা। তুই তো জানিস, আমি দীপককে কতটি ভালবাসি। তা সত্ত্বেও আমি এ কথা ওকে আজও বলিনি। Sorry, দীপক। আমি আপির মত স্বার্থপর হতে পারলাম না। হয়তো তোর কাছে স্বার্থপর। কিন্তু আজও আমি তোকে অনেক ভালবাসিরে দীপক। অনেক বেশি ভালবাসি।”
