বিশ্বাস কি বাহ্যিক দেখার জিনিস? এটি দৃশ্যমান; এটিতে বিশ্বাস কিংবা অবিশ্বাসের কিছু নেই। বিশ্বাস করতে হয় অদেখাকে, অদৃশ্যমানকে। যা দেখা যায়না কিন্তু এর অস্তিত্ত্ব উপলব্ধি করা যায়, তখন সেটি হয় "বিশ্বাস"!
যেমন - ভালোবাসলে কিংবা প্রেম করলে, প্রেমিক প্রেমিকার উভয়ের প্রতি আস্থা জন্মে, তখন একটি সময় এমন উপলব্ধি হয় যে, তার প্রতি নিজেকে সমর্পন করা যায়, এটিই বিশ্বাস। এই বিশ্বাস কিন্তু অল্পদিনেই হয়না, অনেক দিন সময় লাগে এই বিশ্বাস স্থাপন করতে।
কারন ধীরে ধীরে একজন আরেক জনকে উপলব্ধি করে, একজন আরেক জনের স্বরুপ দেখে। এই স্বরুপ কিন্তু কোন বাহ্যিক রুপ নয়, এটি দেখাও যায়না; এটি উপলব্ধির বিষয়, যা মনের আয়নায় প্রতিভাত হয়, এটিই হচ্ছে "বিশ্বাস"।
আবার দেখুন, কোন কিছুতে কিংবা প্রতি মূহুর্তে আপনি যে চরমতম সত্য উপলব্ধি করেন, তার প্রতি আপনার বিশ্বাস রাখতেই হয়, না হলে জীবন চলা স্থবির হয়ে যায়, গতি থাকে না। মানে, একটি সর্বশেষ পৃষ্ঠা বা একটি ছবি বা একটি ডিজাইন বা একটি ব্যাকগ্রাউন্ড কিন্তু মস্তিষ্কে থাকেই। এটি হচ্ছে বিশ্বাসের আপেক্ষিকতা।
এই বিশ্ব ব্রক্ষ্মান্ডে দুই ধরনের অস্তিত্ত্ব বিরাজমান। ১-দৃশ্যমান অস্তিত্ত্ব এবং ২- অদৃশ্যমান অস্তিত্ত্ব। অনেকগুলো পরমানু কণা'র মিথষ্ক্রিয়ায় অংশগ্রহনের ফসল হচ্ছে দৃশ্যমান অস্তিত্ত্ব। কিন্তু সেই পরমানু কণা'কে কিন্তু দেখা যায়না, এটিই অদৃশ্যমান অস্তিত্ত্ব বা অদৃশ্য শক্তি।
মানুষের নিরন্তর বিজ্ঞান গবেষনার মাধ্যমে এই অদৃশ্যমান শক্তি তথা এই সুক্ষ্ম কণা'র অস্তিত্ত্ব প্রমানিত, সে হিসেবে আমরা এই কণা'র অস্তিত্ত্ব জানি, মানি এবং বিশ্বাস করি। কিন্তু এই অদৃশ্যমান শক্তির অস্তিত্ত্ব যদি নিজের ভিতর অনুভূত হয়, কিংবা ভাবনা এবং চিন্তা করে যদি নিজের ভিতর অনুভব কিংবা উপলব্ধি করা যায়, তখন সেটি হয় "বিশ্বাস"।
আবার যদি, এই ভাবনা চিন্তা এবং সাধনার আরো গভীরে প্রবেশ করা যায়, তাহলে সেই অদৃশ্য সুক্ষ্ম শক্তির স্বরুপও দেখা যায়, তখন বিশ্বাস নিজের ভিতরে আসন গেড়ে বসে। আর বিশ্বাস তখন কেবল শুধু বিশ্বাসই থাকেনা; সত্য হয়, ধ্রুব হয়।