একাত্তরে ভারতের সহযোগীতায় পাকিস্তানিদের দেশছাড়া করে আমাদের স্বাধীনতা
এনেছিলাম। কিন্তু যুদ্ধ শেষে সকল অস্ত্র, মুদ্রা ভারত তার দেশে নিয়ে গেলো।
বরিশালের বীর সন্তান মেজর জলিল এর প্রতিবাদ করেছিলেন বলে মুক্তিযুদ্ধের
জন্য তিনি কোনো পদক ও পান নি। বাঙলাদেশের উপর ভারত বাঙলাদেশ স্বাধীন হওয়া
থেকেই প্রভাব বিস্তার শুরু করলো।
বৃটিশরা দেশভাগ করে চলে গিয়েছে ১৯৪৭ এ।বাঙলা অনেক আগেই ভাগ করা হয়েছে। প্রাকৃতিক, খনিজ সম্পদে ভরপুর এলাকাগুলো পাশ থেকে সরিয়ে একটা দেশকে দেয়া হয়েছিলো। আমাদের দেশের পূর্বপাশের জেলাগুলোর দিকে তাকালেই দেখতে পাই দেশের সব খনিজ বা প্রাকৃতিক সম্পদ সব এ এলাকাতেই অবস্থিত। এর আরো পূর্বে ভারতের সেভেন সিস্টার্সে ( নাগাল্যান্ড, মনিপুর, আসাম, মেঘালয়, মিজোরাম, ত্রিপুরা,অরুনাচ ল)
কি পরিমান সম্পদ আছে সেটা চিন্তাও করা যায় না যদিও ভৌগলিকভাবে সেটা ভারত
থেকে বিচ্ছিন্ন। এ অঞ্চলটার জন্য অনেক ষড়যন্ত্র করতে হয়েছিলো একটা সময়ে।
আমি এখন যেটা বলছি সেটা ছিলো শুরু কিন্তু তখন বাঙলাদেশ ছিলো না।
স্বাধীনতার পরের ঘটনাগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ফারাক্কা বাঁধ। আন্তর্জাতিক একটা নদীতে ভারত কোনো কিছুর তোয়াক্বা না করে একটা বাঁধ বানালো। দেশের একটা অংশের কৃষি পুরপুরি বিপর্যস্ত হয়ে গেলো। আমরা আমাদের পানি পাই না, জমি সেচ দিতে পারি না উৎপাদন হবে কিভাবে! প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার কৃষি ক্ষতি হতে থাকলো। আমাদের কথা তারা তখন ও শুনে নি, এরপর ও শুনে নি।
এরপরে দেখা যায় দহগ্রাম-আঙ্গুরপ োতা
ছিটমহল সমস্যা। বাঙলাদেশের এই অংশে যাওয়ার জন্য একটাই রাস্তা যা ভারতের
মধ্যে। বাঙলাদেশের সাথে ১৯৭৪ সালে ভারতের এই চুক্তি হয়েছিলো যে ভারত
বাঙলাদেশকে ঐ তিনবিঘা করিডোর খুলে দিবে বিনিময়ে বাঙলাদেশ ভারতকে বেরুবাড়ী
ছিটমহল দিয়ে দিবে। এ জন্য বাঙলাদেশ ১৯৭৪ সালেই সংবিধানের ৩য় সংশোধনীতেই
বেরুবাড়ী হস্তান্তরের বিধান উল্লেখ করে। কিন্তু ভারত কি আমাদের সেই
তিনবিঘা করিডোর দিয়েছিলো? হা দিয়েছিলো তবে দিনে ১ ঘন্টার জন্য শুধু খুলে
দিতো। বাকি সময় বন্ধ থাকতো..। ১৯৯২ এর ২৬ জুন এই চুক্তির কিছুটা
বাস্তবায়িত হলেও পুরোপুরি আমরা পাই নাই এটা। পরবর্তীতে সকাল ৬ টা থেকে
সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত খোলা থাকতো। শেষমেশ ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ভারত
তিনবিঘা করিডোর পুরোপুরি উন্মুক্ত করে দেয়।ভারত বড় ভাই তো! তাই একটু
ঠেলাঠেলি করতে হয়েছে আরকি!!
বাঙলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার হারিয়াভাঙ্গা নদীর মোহনায় একটা দ্বীপ জেগে উঠলো। ভারত দাবি করে এটা তার, বাঙলাদেশ বলে এই দ্বীপ আমার। আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার গেলো, রায় বাঙলাদেশের পক্ষে। কিন্তু ভারত ছারবে না, বাঙলাদেশকে দিবে না। শেষে সেই দ্বীপ আবার তলিয়ে গেলো, আর কিছু করতে না পেরে ভারত ক্ষান্ত দিলো।
আসি তিস্তা প্রসঙ্গে। তিস্তায় ৭০০০-৮০০০ কিউসেক পানির স্বাভাবিক প্রবাহ হয়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের ভাগ্য পরিবর্তন এর জন্য তিস্তায় বাধ দিলো ভারত। এখন বাঙলাদেশে পানি আসে ৩০০-৪০০ কিউসেক, মানে মরুভূমি। যখন বর্ষা কাল তখন ভারত পানি ছেরে দেয় আর আমরা ভাসি, যখন খরা তখন পানি আটকায় আমরা পানি না পেয়ে মরি।মঙ্গা কি তা বাঙলাদেশের কৃষকরা জানতো না! ভারত সেটা ভালো করে শিখিয়ে দিয়েছে। বড় ভাই শিখাবে না তো কে শিখাবে? হুম!!
এরপরে আমরা পানি চাইলাম বারবার। ভারত পানি দিলো না।পশ্চিমবঙ্গের
মমতা তাদের কৃষকদের প্রতি মমতা দেখিয়ে আন্তর্জাতিক নদীতে ইচ্ছেমত পানির
পরিমান নিয়ন্ত্রন করতেই পছন্দ করবেন। শেষমেশ যখন ইলিশে টান পড়লো তখন আসলো
বাঙলাদেশের কাছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়ে দিলে "পানি
আসলে ইলিশ ও যাবে "। আর কি করার! এখন এভাবে গুতাচ্ছে যে ট্রানজিট দাও তাইলে
পানি দিবো। আরে অধিকার আর আবদার কি এক জিনিস নাকি!! আমাদের কাছে ভারত
ট্রানজিট আবদার করতে পারে কিন্তু তিস্তার পানি আমাদের অধিকার। ভারত এই পানি
আটকে রাখার কে? ট্রানজিট আমরা দিবো কি দিবো না সেটা পরে ভাববো, আগে পানি
দাও। কিন্তু সেই বড় ভাই সমস্যা! তাকে কিছু বলাও যায় না।
সাংস্কৃতিক আগ্রাসন ব্যাপারটা আরো মারাত্মক। ভারতের টিভি চ্যানেল গুলো বাঙলাদেশের সবখানে দেখা যায়। তারা টিভি প্রোগ্রাম তৈরি করে আমাদের কথা মাথায় রেখে। অথচ আমাদের চ্যানেল গুলো ওদের দেশে দেখার সুযোগ নেই। আজকে আমাদের দেশে পাখি ড্রেস, কিরনমালা ড্রেসের জন্য হাহাকার লেগে যায় অথচ আমাদের তাঁত শিল্প হুমকির মুখে। নিজেদের থেকে আমরা ওদের কপি করতে বেশি পছন্দ করছি। বাঙলাদেশের মিউজিক এশিয়ায় সেরা অথচ দেশের নিউ জেনারেশন এর একটা অংশ হিন্দি গান ছারা কিছুই বুঝে না। এই দোষ অবশ্য পুরোপুরি ভারতকে দিলে হবে না।
সবচেয়ে আলোচিত যেটা সেটা হচ্ছে সীমান্তহত্যা। ভারত শত শত বাঙালিকে সীমান্তে হত্যা করে প্রতিবছর। হয়ত নিজের দেশের স্বার্থ আছে বলেই করে কিন্তু ফেলানির মত কিছু কিছু ব্যাপার মানা যায় না। একটা মেয়েকে মেরে কাটাতাঁরে ঝুলিয়ে রাখার মত অমানবিকতা আর কি হতে পারে? সেখানে ঝুলে মেয়েটা ঘন্টার পর ঘন্টা পানি পানি করে মারা গেছে। তারপর সেই বি এস এফ সদস্যকে যখন আদালতে নেয়া হলো তখন জানা গেলো এর আগে ও সে আরেকজনকে হত্যা করেছে। অতঃপর আদালত কি রায় দিলো জানেন! মুক্তি দিয়ে দিলো তাকে। দুজন মানুষ খুনের জন্য এই শাস্তি! এখনো নির্বিচারে বাঙলাদেশি হত্যা করা হয় সীমান্তে। বড় ভাই বলে প্রতিবাদ ও করতে পারি না আমরা।
এরকম শত শত দিক আছে যেভাবে ইন্ডিয়া আমাদের প্রতিনিয়ত ক্ষতি করছে। তারপর ও তারা আমাদের বন্ধু। কারন আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে তাদের সমর্থন অনেক বড় একটা শক্তি ছিলো আমাদের। এখনো কোনো সমস্যায় পরলে ভারতকেই বন্ধুরূপে সবার আগে কাম্য থাকে আমাদের। আমাদের মধ্যে সম্পর্কটা বন্ধু প্রতিবেশি রাষ্ট্রের মতই। কিন্তু বন্ধু যখন একটু শক্তিশালী হয়ে যায় তখন ছোটো ছোটো অনেক খোঁচা আপনি খাবেন সেটাই স্বাভাবিক। আমাদের ভূখন্ড ছোটো কিন্তু আমাদের ক্ষমতা ও আছে সবার থেকে এগিয়ে যাওয়ার। কাউকে এইটুকু ফিরিয়ে দিতে না আমাদের আগাতে হবে যাতে আর কেউ ছোটো না ভাবতে পারে সে জন্য। তখন ভারত ও তাল মিলাতে আসবে তবে সেটা যেভাবেই হোক ভারতের সাথে সুসম্পর্ক থাকাটা সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে আমি চাইবো সেটা যেনো বন্ধুতে-বন্ধুতে সমান সমান হয়....
বৃটিশরা দেশভাগ করে চলে গিয়েছে ১৯৪৭ এ।বাঙলা অনেক আগেই ভাগ করা হয়েছে। প্রাকৃতিক, খনিজ সম্পদে ভরপুর এলাকাগুলো পাশ থেকে সরিয়ে একটা দেশকে দেয়া হয়েছিলো। আমাদের দেশের পূর্বপাশের জেলাগুলোর দিকে তাকালেই দেখতে পাই দেশের সব খনিজ বা প্রাকৃতিক সম্পদ সব এ এলাকাতেই অবস্থিত। এর আরো পূর্বে ভারতের সেভেন সিস্টার্সে ( নাগাল্যান্ড, মনিপুর, আসাম, মেঘালয়, মিজোরাম, ত্রিপুরা,অরুনাচ
স্বাধীনতার পরের ঘটনাগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ফারাক্কা বাঁধ। আন্তর্জাতিক একটা নদীতে ভারত কোনো কিছুর তোয়াক্বা না করে একটা বাঁধ বানালো। দেশের একটা অংশের কৃষি পুরপুরি বিপর্যস্ত হয়ে গেলো। আমরা আমাদের পানি পাই না, জমি সেচ দিতে পারি না উৎপাদন হবে কিভাবে! প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার কৃষি ক্ষতি হতে থাকলো। আমাদের কথা তারা তখন ও শুনে নি, এরপর ও শুনে নি।
এরপরে দেখা যায় দহগ্রাম-আঙ্গুরপ
বাঙলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার হারিয়াভাঙ্গা নদীর মোহনায় একটা দ্বীপ জেগে উঠলো। ভারত দাবি করে এটা তার, বাঙলাদেশ বলে এই দ্বীপ আমার। আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার গেলো, রায় বাঙলাদেশের পক্ষে। কিন্তু ভারত ছারবে না, বাঙলাদেশকে দিবে না। শেষে সেই দ্বীপ আবার তলিয়ে গেলো, আর কিছু করতে না পেরে ভারত ক্ষান্ত দিলো।
আসি তিস্তা প্রসঙ্গে। তিস্তায় ৭০০০-৮০০০ কিউসেক পানির স্বাভাবিক প্রবাহ হয়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের ভাগ্য পরিবর্তন এর জন্য তিস্তায় বাধ দিলো ভারত। এখন বাঙলাদেশে পানি আসে ৩০০-৪০০ কিউসেক, মানে মরুভূমি। যখন বর্ষা কাল তখন ভারত পানি ছেরে দেয় আর আমরা ভাসি, যখন খরা তখন পানি আটকায় আমরা পানি না পেয়ে মরি।মঙ্গা কি তা বাঙলাদেশের কৃষকরা জানতো না! ভারত সেটা ভালো করে শিখিয়ে দিয়েছে। বড় ভাই শিখাবে না তো কে শিখাবে? হুম!!
এরপরে আমরা পানি চাইলাম বারবার। ভারত পানি দিলো না।পশ্চিমবঙ্গের
সাংস্কৃতিক আগ্রাসন ব্যাপারটা আরো মারাত্মক। ভারতের টিভি চ্যানেল গুলো বাঙলাদেশের সবখানে দেখা যায়। তারা টিভি প্রোগ্রাম তৈরি করে আমাদের কথা মাথায় রেখে। অথচ আমাদের চ্যানেল গুলো ওদের দেশে দেখার সুযোগ নেই। আজকে আমাদের দেশে পাখি ড্রেস, কিরনমালা ড্রেসের জন্য হাহাকার লেগে যায় অথচ আমাদের তাঁত শিল্প হুমকির মুখে। নিজেদের থেকে আমরা ওদের কপি করতে বেশি পছন্দ করছি। বাঙলাদেশের মিউজিক এশিয়ায় সেরা অথচ দেশের নিউ জেনারেশন এর একটা অংশ হিন্দি গান ছারা কিছুই বুঝে না। এই দোষ অবশ্য পুরোপুরি ভারতকে দিলে হবে না।
সবচেয়ে আলোচিত যেটা সেটা হচ্ছে সীমান্তহত্যা। ভারত শত শত বাঙালিকে সীমান্তে হত্যা করে প্রতিবছর। হয়ত নিজের দেশের স্বার্থ আছে বলেই করে কিন্তু ফেলানির মত কিছু কিছু ব্যাপার মানা যায় না। একটা মেয়েকে মেরে কাটাতাঁরে ঝুলিয়ে রাখার মত অমানবিকতা আর কি হতে পারে? সেখানে ঝুলে মেয়েটা ঘন্টার পর ঘন্টা পানি পানি করে মারা গেছে। তারপর সেই বি এস এফ সদস্যকে যখন আদালতে নেয়া হলো তখন জানা গেলো এর আগে ও সে আরেকজনকে হত্যা করেছে। অতঃপর আদালত কি রায় দিলো জানেন! মুক্তি দিয়ে দিলো তাকে। দুজন মানুষ খুনের জন্য এই শাস্তি! এখনো নির্বিচারে বাঙলাদেশি হত্যা করা হয় সীমান্তে। বড় ভাই বলে প্রতিবাদ ও করতে পারি না আমরা।
এরকম শত শত দিক আছে যেভাবে ইন্ডিয়া আমাদের প্রতিনিয়ত ক্ষতি করছে। তারপর ও তারা আমাদের বন্ধু। কারন আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে তাদের সমর্থন অনেক বড় একটা শক্তি ছিলো আমাদের। এখনো কোনো সমস্যায় পরলে ভারতকেই বন্ধুরূপে সবার আগে কাম্য থাকে আমাদের। আমাদের মধ্যে সম্পর্কটা বন্ধু প্রতিবেশি রাষ্ট্রের মতই। কিন্তু বন্ধু যখন একটু শক্তিশালী হয়ে যায় তখন ছোটো ছোটো অনেক খোঁচা আপনি খাবেন সেটাই স্বাভাবিক। আমাদের ভূখন্ড ছোটো কিন্তু আমাদের ক্ষমতা ও আছে সবার থেকে এগিয়ে যাওয়ার। কাউকে এইটুকু ফিরিয়ে দিতে না আমাদের আগাতে হবে যাতে আর কেউ ছোটো না ভাবতে পারে সে জন্য। তখন ভারত ও তাল মিলাতে আসবে তবে সেটা যেভাবেই হোক ভারতের সাথে সুসম্পর্ক থাকাটা সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে আমি চাইবো সেটা যেনো বন্ধুতে-বন্ধুতে