ঈশ্বরের আগে যদি শুন্য থাকে তাহলে মহাবিশ্বের আগে শুন্য থাকলে ঝামেলা কী?
ঝামেলাটা বাঁধাইছেন হকিং সাহেব। এই লোকের সবচেয়ে ধর্ম ভীরু হওয়ার কথা
ছিল।অনেকে বলে, নাস্তিক হতে চায় কারন নাস্তিক হলে নাকি অনেক মজা করা
যায়,আনন্দ করা যায়,যেভাবে খুশি সেভাবে লাইফ লিড করা যায়,মদ-নারী এইসব
ডাল-ভাত হয়ে যায়। তা মশাই,হকিং সাহেবতো যা খুশি তা দূরের কথা নিজে কাউরে
মুখ দিয়ে গালিও দিতে পারেনা তাহলে হকিং সাহেব কেন নাস্তিক হলেন? এর কারন
কী?উনি যা বলছেন তা হল এই মহাবিশ্ব কেউ সৃষ্টি করারই দরকার নেই বা ঈশ্বরের
প্রয়োজনীয়তা নেই। কারন বিগ ব্যাংগের আগে সময় বলেই কিছু ছিল না। তাই ঈশ্বর
নামক কোন কিছু বিগ ব্যাংগের আগে যদি থাকেও তাহলে তার জন্যও সময় বলে কিছু
ছিল না। এখন কথা হল সময় বলতে আমরা এখন যা বুঝি তা বিগ ব্যাংগের আগে ছিলই
না। ঈশ্বর নামক প্রাচীন ধারনা নাকি শ্বাশত। তার মানে এর শুরু কিংবা শেষ
কিছুই নেই। না এই কথা ভুল।কারন শুরু থাকতেই হবে। যার শুরু নেই তার
অস্তিত্বও নেই। কিন্তু এই মহাবিশ্বের শুরু আছে। বিগ ব্যাংগের পর অনেক অনেক
সময় পেরোনোর পরই এইসব গ্রহ তৈরী হয়েছে। মহাবিশ্বে পৃথিবী একটা ছোট্ট টেনিস
বলও নয়। কারন বর্তমানে পৃথিবীর চেয়ে অনেক বড় বড় গ্রহ আবিষ্কার হয়েছে। যদি
এই পৃথিবীতেই একমাত্র বুদ্ধিমান প্রানী থাকে তাহলে ওইসব গ্রহে কি আসলেই
কিছু নেই? ঈশ্বরেরও শুরু থাকতে হবে।আর শুরু থাকা মানে ঈশ্বর এক সময় ছিলেন
না কিংবা থেমে ছিলেন।তবে শুরু হওয়া আর উৎপত্তি হওয়া ভিন্ন ব্যাপার। ঈশ্বরের
উৎপত্তি হওয়ার পর ঈশ্বর কি অবস্থায় ছিলেন তা খুবই ইন্টারেস্টিং একটা
ব্যাপার। ঈশ্বর যদি চিন্তা করেন তাহলে তা অত্যন্ত মজার একটা ব্যাপার হবে
কারন তাহলে তার একটা ব্রেন(বা এই টাইপের কিছু)অবশ্যই থাকবে। তাহলে কি
ঈশ্বরের উৎপত্তির সময় তার ব্রেন পুরোপুরি বিকশিত ছিল? ঈশ্বর নাকি একাধিক
দিনে মহাবিশ্ব বানিয়েছেন কেন একাধিক দিন লাগারতো কথা নয়। কারন ঈশ্বর নাকি
হও বললেই হয়ে যায় এখানে একাধিক দিন লাগার মানে হল ঈশ্বরকেও একটা নির্দিষ্ট
পর্যায় মেনে সৃষ্টি করতে হয়। আচ্ছা হকিং সাহেব নামের এই ভদ্রলোকের জন্ম যদি
আজ থেকে ৫০০০ হাজার বছর আগে হত তাহলে কি পৃথিবীর ইতিহাসই পরিবর্তন হয়ে যেত
না? কই কোন ধর্ম গ্রন্থতো বলতে পারলো না বিগ ব্যাংগ থিউরীর কথা। এখন যদি
নির্লজ্জের মত হকিং সাহেবের কৃতিত্ব কোন ধর্ম প্রচারক স্বীয় ধর্মের বলে
দাবি করে তাহলে তা পেটেন্ট আইনের স্পষ্ট ভায়োলেশন হবে। ধর্ম গ্রন্থগুলোর
প্রায় সব গুলোতেই অনেক মিল লক্ষ্য করা যায়। যদিও ত্রিপিটক সম্পর্কে আমার
কোন ধারনা নেই কিন্তু আমি বৌদ্ধ ধর্ম নিয়ে একদম ভাবিনা কারন গৌতম বুদ্ধ
নিজেই ছিলেন নাস্তিক। তিনি নাস্তিক হওয়ার কারনে বৌদ্ধ ধর্ম ঈশ্বর নামক
প্রাচীন প্রথা হতে মুক্ত কিন্তু বর্তমানে তাদের অনেকেই ঈশ্বর আমদানী করতে
চাচ্ছেন যা আসলে কিছুটা পরের অনুকরন বৈ আর কিছুই নয়। যাক কথা হচ্ছিল এই
মহাবিশ্ব শুরুর আগে যদি জিরো ধরি তাহলে প্রশ্ন আসতে পারে কেন বিগ ব্যাংগ
হলো? তাহলে এই প্রশ্নটাও আসাটা খুবই স্বাভাবিক যে কেন ঈশ্বর অস্তিত্বে
আসলেন? আরো একটা কথা এখানে খুবই প্রাসঙ্গিক যে ঈশ্বরের কি প্রান আছে কিনা?
যদি থাকে তাহলে ঈশ্বর জীবন্ত হবেন এবং তার একটা বয়স থাকাটা খুবই স্বাভাবিক।
কিন্তু বিগ ব্যাংগের আগে যেহেতু প্রচলিত সময় বলে কিছু ছিল না তাহলে
ঈশ্বরের উৎপত্তি থেকে মহাবিশ্ব তৈরী পর্যন্ত ঈশ্বর কী করেছিলেন? খুব সম্ভবত
চিন্তা করেছিলেন। কিন্তু ঈশ্বর বিগ ব্যাংগের কথা কোন ধর্ম গ্রন্থেই বলেননি
কিন্তু মানুষ জেনে গেছে। এখন বিগ ব্যাংগের আগে কী হয়েছিল তাও একদিন খুব
ভালো ভাবেই মানুষের জানা হবে। অনেকেই বলেন এবং বেশ রাশভারী কন্ঠে বলেন
যে,মহাবিশ্ব নিজে নিজে সৃষ্টি হতে পারেনা। কেন মশাই যখন ঈশ্বর নিজে নিজে
সৃষ্টি হতে পারেন তখন এই ব্যাটা মহাবিশ্ব কি অন্যায় করলো যে সে নিজে নিজে
তৈরী হতে পারবেনা? প্রাচীন কালেও চিন্তাশীল লোক ছিল। তারাও হকিং সাহেবের মত
বসে বসে চিন্তা করতো। যেহেতু তাদের জ্ঞানের পরিধি কম ছিল তাই তারা বের
করলো ঈশ্বরের ধারনা আর হকিং সাহেব বের করলেন বিগ ব্যাংগ থিউরি।