Monday, September 7, 2015

"পকেটমারের খোলা চিঠির উত্তরে সন্ত্রাসী: এটি একটি ব্যাঙ্গাত্বক চিঠি। চিঠি পড়ে কেউ কষ্ট পেলে আমি দু:খিত!---

প্রিয় পকেটমার,
প্রথমেই তাজা বুলেটের শুভেচ্ছা নিবে। কেমন আছো? আশা করি ভালই আছো, ঈদের ভিড়ে ভালই কামাচ্ছো। ভয়ের কোনো কারন নেই। ইচ্ছে মতো কামিয়ে যাও। আমরা প্রশাসনকে আমাদের দিকেই ব্যস্ত রেখেছি। তোমাদের মতো চুনো পুঁটির দিকে তাদের তাকানোর সময় নেই। তবে সাবধান, পকেট মারতে গিয়ে জনগণের হাতে পোড়ো না। তারা তোমাদের আর আমাদের উপর বড়ই ক্ষ্যাপা। তারা সব সময় সর্বস্ব খুইয়ে খুইয়ে তেলে বেগুনে জ্বলে আছে। এই ঈদের সামনে তাদের হাতে যদি একবার ধরা পড়ো, তাহলে নিশ্চিৎ চিরদিনের জন্য গোরস্থানে বেড়াতে চলে যাবে। আর কোনো কারণে যদি বেঁচেও যাও তাহলে পঙ্গু হাসপাতাল থেকে বছর খানেকের জন্য ছুটি কাটিয়ে আসতে হবে। এই ছুটি মওকুফের জন্য জনতার হাতে পায়ে ধরলেও তারা কিন্তু ছুটি দিবে না। এই কথাটি আগেই বলে রাখলাম কিন্তু।
ভাই , তোমরা আমাদের প্রতি অভিযোগ করেছো যে, তোমাদেরকে আমরা সময় দিই না। তোমাদেরকে যে সময় দিব, এই সময়টা কোথায় বলো? নেতা, প্রশাসন আর জনগণকে সময় দিতে গিয়ে অনেক সময় আমরা, নিজেরাই নিজেদেরক সময় দিতে পারি না। চিঠিতে আমাদের দ্রুত উন্নতি সম্পর্কে অনেক প্রশংসা করেছ। খুব খুশি হয়েছি। কিন্তু বাইরে থেকে শুধু আমাদের চাকচিক্যটাই দেখলে ভাই। আমরা ভেতরে যে কি রকম, মাকাল ফলের দিকে তাকালেই তা বুঝতে পারবে। আমাদেরকে অনেক সময় নেতার গালেও চুমো দিতে হয়, পুলিশের গালেও চুমো দিতে হয়। ঠিক যেন বাঘের মুখে এক চুমো, সাপের মুখে এক চুমো। সত্যি কথা বলতে কি আমরা ভালো হতে চাইলেও কিছু কিছু নেতা এবং পুলিশের কারণে ভালো হতে পারি না। মাঝে মাঝে তারা আমাদেরকে ইচ্ছে মতো ব্যবহার করে। আমরা ভালই বিপদে আছি। নেতা আর প্রশাসন ভালো হয়ে গেলে রাতারাতি আমাদের বংশ নির্বংশ হয়ে যাবে। আমরা প্রায় অস্তিত্ব সংকটে।
বিশেষ করে ভো্টের সময় আমরা বিভিন্ন দলীয় ব্যানারে ঢুকে যাই। ভদ্রলোক নেতারা আমাদেরকে ঘুণাক্ষরেও চিনতে পারে না। তবে অনেক নেতা আবার আমাদের উপর ভর দিয়েই রাজনীতি করে। তাদের আচার আচরণ দেখলেই তা বুঝতে পারবে। তাদের পেশীশক্তিতে ভর করেই আমাদেরকে চলতে হয়। তাই এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চাই না।
চিঠির শেষে বিদেশী মদ খেতে চেয়েছ। তোমাদেরকে মদ খাওয়াব আমাদের সময় কোথায়? তোমরা কিছু কিছু নেতার সাথে যোগাযোগ করো। দেখবে তোমাদের ভাগ্যাকাশে তারাই উন্নয়নের কারণ হবে। তোমরা তাদের সাথে মিলেমিশে যাও। দেখবে তোমরাও একদিন আমাদের মতো হয়ে গেছ। সময় সংক্ষিপ্ত। বেশি কিছু লিখতে পারলাম না। সাক্ষাৎ এ কথা হবে। সব শেষে আবার বলছি, দেখ সচেতন জনতার পকেটে হাত মেরে নিজের ঈদটাকে মাটি করে দিও না। কামনা করি, এই সময়ে যেন তোমাদেরকে গোরস্থান এবং পঙ্গু হাসপাতালে যেতে না হয়।
ইতি
তোমাদের স্নেহের ছোট ভাই
সন্ত্রাসী।