‘ইয়াবা’-
হালের
মাদকাসক্ত তরুণ-তরুণীদের ক্রেজ। সাময়িক আনন্দ আর উত্তেজনার আশায় দেশের যুব সমাজের বিশাল এক অংশ
ঝুঁকছে
মাদকের প্রতি। সমাজের
নিচু থেকে উঁচু স্তর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে মাদকের সর্বগ্রাসী থাবা। গাঁজা,
ফেন্সিডিল,
হেরোইন,
পেথিডিনের
পথ ধরে দেশে এখন
সহজলভ্য হয়ে উঠেছে ইয়াবা।
ইয়াবা একটি থাই শব্দ। যে ট্যাবলেটটি ইয়াবা নামে পরিচিত তার মূল উপাদানটির নাম মেথঅ্যামফেটামিন। মেথঅ্যামফেটামিনের সাথে ক্যাফেইন মিশিয়ে প্রস্তুত করা হয় ইয়াবা। প্রচন্ড উত্তেজক ও নেশাকারক এ ট্যাবলেটটি সীমান্তপথে চোরাচালানের মাধ্যমে যেমন আনা যায়, তেমনি এর উপকরণগুলো এনে দেশের ভেতরেই তা তৈরী করা সম্ভব। তরুণ-তরুণীদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে মূল উপাদানের সাথে মেশানো হয় আঙ্গুর, কমলা বা ভ্যানিলার ফ্লেভার; সবুজ বা লাল-কমলা রং। ইয়াবা নামের ছোট্ট এই ট্যাবলেটটি দেখতে অনেকটা ক্যান্ডির মতো, স্বাদেও তেমন-ই। ফলে আসক্তরা এর প্রচন্ড ক্ষতিকর প্রভাবটুকু প্রথমে বুঝতে পারে না।
অধিকাংশ মাদকসেবী ট্যাবলেটটি মুখেই গ্রহণ করে। অনেকে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলের উপর রাখা ট্যাবলেটের অপর প্রান্তে তাপ দিয়ে একে গলিয়ে ফেলে। এরপর সেখান থেকে যে বাষ্প বের হয়, তা নিশ্বাসের সাথে গ্রহণ করে। আবার ট্যাবলেটটি গুঁড়ো করে, পানিতে মিশিয়ে সিরিঞ্জের মাধ্যমে শিরাপথে সরাসরি রক্তেও ঢুকিয়ে দেয় অনেকে।
ইয়াবার ক্ষতিকর দিকঃ-
ইয়াবার আনন্দ আর উত্তেজনা আসক্তদের সাময়িকভাবে ভুলিয়ে দেয় জীবনের সব যন্ত্রণা। তারা বাস করে স্বপ্নের এক জগতে। কিন্তু স্বপ্নীল এ জীবনের হাতছানি যে তাদের ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে তা টের পাওয়ারও অবকাশ সে সময় তাদের থাকে না। প্রথমে কম ডোজে এই ট্যাবলেট কাজ করলেও পরে ধীরে ধীরে ডোজ বাড়াতে হয়। আগে যে পরিমাণ ইয়াবা আনন্দ এনে দিত, পরে তাতে আর হয় না। বাড়তে থাকে ট্যাবলেটের পরিমাণ, ক্ষণস্থায়ী আনন্দের পর বাড়তে থাকে ক্ষতিকর নানা উপসর্গও। রাত কাটে নির্ঘুম, শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়তে থাকে, মেজাজ হয় খিটখিটে, গলা-মুখ শুকিয়ে আসতে থাকে অনবরত। প্রচন্ড ঘাম আর গরমের অসহ্য অনুভূতি বাড়তে থাকে। বাড়ে নাড়ীর গতি, রক্তচাপ, দেহের তাপমাত্রার আর শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি। দীর্ঘদিনের আসক্তরা উচ্চ রক্তচাপের রোগীই হয়ে পড়েন। ব্রেনের ভেতরকার ছোট রক্তনালীগুলো ক্ষয় হতে থাকে, স্মৃতিশক্তি কমে যায়, মানসিক নানা রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। দৃষ্টিবিভ্রম আর অস্বাভাবিক সন্দেহ প্রভৃতি উপসর্গ থেকে একসময় সিজোফ্রেনিয়ার মতো জটিল মানসিক ব্যাধিও দেখা দেয়। বেশী পরিমাণে নেয়া ইয়াবা শারীরবৃত্তীয় স্বাভাবিক কার্যক্রমের ব্যত্যয় ঘটিয়ে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত ডেকে আনতে পারে। আর যারা সিরিঞ্জের মাধ্যমে দেহে ইয়াবা প্রবেশ করায়, তারা হেপাটাইটিস বি, সি ও এইডসের মতো মারাত্মক রক্তবাহিত রোগের জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হতে পারে।
ইয়াবার পরিমাণ বাড়ানোর পাশাপাশি আসক্তরা এর উপর শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। একবার ইয়াবা নেয়ার কয়েক ঘন্টা বা নির্দিষ্ট সময় পর আবার না নিলে শরীরে ও মনে নানা উপসর্গ দেখা দেয়, ফলে বাধ্য হয়ে আসক্তরা আবার ফিরে যায় নেশার জগতে।
ফিরে আসা সম্ভব স্বাভাবিক জীবনেঃ-
তবে হ্যাঁ! যারা আবার ফিরে পেতে চায় স্বাভাবিক সুস্থ জীবন তাদের নিরাশ হওয়ার কিছু নেই। এমন নয় যে আসক্তরা আর কখনোই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবেনা। মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শে বিভিন্ন ধরণের চিকিত্সা পদ্ধতি তাদের আশার আলো দেখাচ্ছে; তারা ফিরে যেতে পারছে মাদকমুক্ত জীবনধারায়। ওষুধ, সাইকোথেরাপী ও অন্যান্য উপায়ে মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে স্বাভাবিক ও সুস্থ জীবনযাপন পদ্ধতিতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়, পরিবর্তন করার চেষ্টা করা হয় তার আগের পারিপার্শ্বিক পরিবেশ, যা তাকে মাদকাসক্ত হতে উদ্বুদ্ধ করেছিল। এতে মানসিক রোগ চিকিত্সক ও সাইকোলজিস্টের যেমন ভূমিকা রয়েছে, তেমনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার রয়েছে পরিবার, স্বজন আর প্রকৃত ভাল বন্ধুরও। একজন নেশাসক্ত ব্যক্তি সবার সম্মিলিত সহযোগিতাতেই আবার ফিরে পেতে পারে মাদকমুক্ত সুস্থ জীবন।
ইয়াবা একটি থাই শব্দ। যে ট্যাবলেটটি ইয়াবা নামে পরিচিত তার মূল উপাদানটির নাম মেথঅ্যামফেটামিন। মেথঅ্যামফেটামিনের সাথে ক্যাফেইন মিশিয়ে প্রস্তুত করা হয় ইয়াবা। প্রচন্ড উত্তেজক ও নেশাকারক এ ট্যাবলেটটি সীমান্তপথে চোরাচালানের মাধ্যমে যেমন আনা যায়, তেমনি এর উপকরণগুলো এনে দেশের ভেতরেই তা তৈরী করা সম্ভব। তরুণ-তরুণীদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে মূল উপাদানের সাথে মেশানো হয় আঙ্গুর, কমলা বা ভ্যানিলার ফ্লেভার; সবুজ বা লাল-কমলা রং। ইয়াবা নামের ছোট্ট এই ট্যাবলেটটি দেখতে অনেকটা ক্যান্ডির মতো, স্বাদেও তেমন-ই। ফলে আসক্তরা এর প্রচন্ড ক্ষতিকর প্রভাবটুকু প্রথমে বুঝতে পারে না।
অধিকাংশ মাদকসেবী ট্যাবলেটটি মুখেই গ্রহণ করে। অনেকে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলের উপর রাখা ট্যাবলেটের অপর প্রান্তে তাপ দিয়ে একে গলিয়ে ফেলে। এরপর সেখান থেকে যে বাষ্প বের হয়, তা নিশ্বাসের সাথে গ্রহণ করে। আবার ট্যাবলেটটি গুঁড়ো করে, পানিতে মিশিয়ে সিরিঞ্জের মাধ্যমে শিরাপথে সরাসরি রক্তেও ঢুকিয়ে দেয় অনেকে।
ইয়াবার ক্ষতিকর দিকঃ-
ইয়াবার আনন্দ আর উত্তেজনা আসক্তদের সাময়িকভাবে ভুলিয়ে দেয় জীবনের সব যন্ত্রণা। তারা বাস করে স্বপ্নের এক জগতে। কিন্তু স্বপ্নীল এ জীবনের হাতছানি যে তাদের ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে তা টের পাওয়ারও অবকাশ সে সময় তাদের থাকে না। প্রথমে কম ডোজে এই ট্যাবলেট কাজ করলেও পরে ধীরে ধীরে ডোজ বাড়াতে হয়। আগে যে পরিমাণ ইয়াবা আনন্দ এনে দিত, পরে তাতে আর হয় না। বাড়তে থাকে ট্যাবলেটের পরিমাণ, ক্ষণস্থায়ী আনন্দের পর বাড়তে থাকে ক্ষতিকর নানা উপসর্গও। রাত কাটে নির্ঘুম, শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়তে থাকে, মেজাজ হয় খিটখিটে, গলা-মুখ শুকিয়ে আসতে থাকে অনবরত। প্রচন্ড ঘাম আর গরমের অসহ্য অনুভূতি বাড়তে থাকে। বাড়ে নাড়ীর গতি, রক্তচাপ, দেহের তাপমাত্রার আর শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি। দীর্ঘদিনের আসক্তরা উচ্চ রক্তচাপের রোগীই হয়ে পড়েন। ব্রেনের ভেতরকার ছোট রক্তনালীগুলো ক্ষয় হতে থাকে, স্মৃতিশক্তি কমে যায়, মানসিক নানা রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। দৃষ্টিবিভ্রম আর অস্বাভাবিক সন্দেহ প্রভৃতি উপসর্গ থেকে একসময় সিজোফ্রেনিয়ার মতো জটিল মানসিক ব্যাধিও দেখা দেয়। বেশী পরিমাণে নেয়া ইয়াবা শারীরবৃত্তীয় স্বাভাবিক কার্যক্রমের ব্যত্যয় ঘটিয়ে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত ডেকে আনতে পারে। আর যারা সিরিঞ্জের মাধ্যমে দেহে ইয়াবা প্রবেশ করায়, তারা হেপাটাইটিস বি, সি ও এইডসের মতো মারাত্মক রক্তবাহিত রোগের জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হতে পারে।
ইয়াবার পরিমাণ বাড়ানোর পাশাপাশি আসক্তরা এর উপর শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। একবার ইয়াবা নেয়ার কয়েক ঘন্টা বা নির্দিষ্ট সময় পর আবার না নিলে শরীরে ও মনে নানা উপসর্গ দেখা দেয়, ফলে বাধ্য হয়ে আসক্তরা আবার ফিরে যায় নেশার জগতে।
ফিরে আসা সম্ভব স্বাভাবিক জীবনেঃ-
তবে হ্যাঁ! যারা আবার ফিরে পেতে চায় স্বাভাবিক সুস্থ জীবন তাদের নিরাশ হওয়ার কিছু নেই। এমন নয় যে আসক্তরা আর কখনোই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবেনা। মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শে বিভিন্ন ধরণের চিকিত্সা পদ্ধতি তাদের আশার আলো দেখাচ্ছে; তারা ফিরে যেতে পারছে মাদকমুক্ত জীবনধারায়। ওষুধ, সাইকোথেরাপী ও অন্যান্য উপায়ে মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে স্বাভাবিক ও সুস্থ জীবনযাপন পদ্ধতিতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়, পরিবর্তন করার চেষ্টা করা হয় তার আগের পারিপার্শ্বিক পরিবেশ, যা তাকে মাদকাসক্ত হতে উদ্বুদ্ধ করেছিল। এতে মানসিক রোগ চিকিত্সক ও সাইকোলজিস্টের যেমন ভূমিকা রয়েছে, তেমনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার রয়েছে পরিবার, স্বজন আর প্রকৃত ভাল বন্ধুরও। একজন নেশাসক্ত ব্যক্তি সবার সম্মিলিত সহযোগিতাতেই আবার ফিরে পেতে পারে মাদকমুক্ত সুস্থ জীবন।